ধামাকার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকার বিরুদ্ধে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সিআইডির পক্ষ থেকে সহকারী পুলিশ সুপার আল আমিন বাদী হয়ে বনানী থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি করেন।

বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া বলেন, ধামাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসীম উদ্দিন চিশতীসহ ছয়জন এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি করা হয়েছে।

ধামাকার মালিকানা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোট্রেড গ্রুপ, সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম লিমিটেড এবং ইনভেরিয়েন্ট টেকনোলজি লিমিটেড- এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন- জসীম উদ্দিনের স্ত্রী ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদা রোকসানা খানম, জসীম উদ্দিনের ছেলে একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তাশফির রেদোয়ান চিশতী, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিমউদ্দীন আসিফ, পরিচালক মাশফিক রেদোয়ান চিশতী ও পরিচালক সাফওয়ান আহমেদ।

সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, ধামাকার ব্যাংক একাউন্ট থেকে প্রায় ১১৬ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং হয়েছে। ধামাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রমের উপর তদন্ত করে এই আর্থিক কেলেঙ্কারির সন্ধান পাওয়া গেছে।

সিআইডি সূত্র জানায়, জসীম উদ্দিন ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড চালানোর জন্য ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে ডেভেলপমেন্ট সফটওয়্যার, টেলিকম সিস্টেমস, স্মার্টফোন,আইপি ফোন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, কমিউনিকেশন আমদানি-রফতানি ব্যবসার নামে নিবন্ধন নেন। গত বছর অক্টোবর থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য ‘ধামাকা শপিং’ নামে অবৈধভাবে ই–কমার্স ব্যবসা চালু করেন তিনি।

অনুসন্ধানে সিআইডি জানতে পারে, এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করার জন্যই ধামাকা শপিং নাম ব্যবহার করে। ইনভেরিয়েন্ট টেলিকমের সঙ্গ সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ধামাকা শপিংয়ের নামে কোনো অনুমোদন, নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, বিআইএন, ব্যাংক হিসাব বা দালিলিক ভিত্তি ছাড়াই প্রতারণার উদ্দেশ্যে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করেন। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে নিরীহ জনসাধারণের অর্থ আত্মসাৎ করাই ছিল প্রতারক চক্রটির মূল উদ্দেশ্য।

সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, ধামাকা পরিচালনাকারীরা ঢাকার একোয়া টাওয়ার, বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়ক, মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থান করে অবৈধভাবে ধামাকা শপিং ই-কমার্স সাইট/আপসের মাধ্যমে কথিত ব্যবসা পরিচালনা করে পাঁচ লক্ষাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময় অস্বাভাবিক কম মূল্যে মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহের প্রলোভন দেখায়। পরে গ্রাহকদের কাছ থেকে তিনটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৮০৩ কোটি ৫১ লাখ ৯১ হাজার ৬৩ টাকা গ্রহণ করে ধামাকা। প্রথম দিকে অল্পসংখ্যক গ্রাহককে কিছু পণ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে অধিকসংখ্যক গ্রাহক আকৃষ্ট করে ধামাকা। পরে তাদের পণ্য সরবরাহ না করে প্রতিষ্ঠানটি প্রতারণা করে। অন্যদিকে ৬০০ সরবরাহকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনার নামে ২০০ কোটি টাকার পণ্য গ্রহণ করে মূল্য পরিশোধ না করেও প্রতারণা করে ধামাকা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh