নারী ফুটবলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ

তারিক আল বান্না

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:৫১ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বিশ্ব পুরুষ ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান লজ্জাজনক। বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ঠিক এ মুহূর্তে বাংলাদেশ আছে ১৮৬ নম্বরে। পুরুষ ফুটবলে অগ্রগতি না হলেও নারী ফুটবলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ রয়েছে।

দেশে পুরুষ ফুটবলের চর্চা হচ্ছে প্রায় ৫০ বছর যাবত, আর নারী ফুটবলের চর্চা হচ্ছে মাত্র ১১ বছর ধরে। এই স্বল্প সময়ের সুযোগ-সুবিধার পরও নারীরা ফুটবলে পুরুষদের তুলনায় পারদর্শিতা বেশি দেখিয়েছে। এবার নারী এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে ভালো করলে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবে বাংলাদেশ। ভারতে এশিয়া কাপের মূলপর্ব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি। 

সামনে এশিয়া কাপ নারী ফুটবলের বাছাই পর্ব। সেখানে বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে ইরান ও জর্দান। দল দুটিই বাংলাদেশের তুলনায় বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে অনেকটা এগিয়ে। এই প্রতিযোগিতায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল চূড়ান্তপর্বের টিকিট পাবে; কিন্তু বাংলাদেশের জন্য সেটা অনেক কঠিন। আমাদের নারীরা প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলে আজ থেকে মাত্র এগারো বছর আগে, ২০১০ সালে। এই এগারো বছরের অভিজ্ঞতায় নারী জাতীয় দল এখনো ভালো পজিশনে আসেনি। তবে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী আসরের শিরোপা জয় করে যোগ্যতার পরিচয় দেয়। বাংলাদেশের ওই দলের অনেকেই এখন মূল দলে আছেন। তারা এই চার বছরে নিশ্চয়ই আরও বেশি পরিপক্ব হয়ে উঠেছেন।

নারী ফুটবলে ইরান ও জর্দান বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী হলেও পার্থক্য বেশি নয়। জর্দান ফিফা র‌্যাংকিংয়ে রয়েছে ৬৩তম স্থানে। আর ইরান রয়েছে ৭২ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে ভারত ও নেপাল। ভারত ৫৭ নম্বরে, আর নেপাল রয়েছে ১০১ নম্বরে। বাংলাদেশের নিচে রয়েছে শ্রীলঙ্কা (১৪৩তম), মালদ্বীপ (১৪৪তম) ও ভুটান (১৬১)। নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক পরে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ২০১০ সালে নেপালের সঙ্গে। নারী জাতীয় দল সফলতা না পেলেও জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দলটি বাজিমাত করেছে। প্রথম সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা লাভ করে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই আসরে বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ভারতীয় দলকে লিগপর্বে ৩-০ গোলে পরাজিত করে চমক দেখায়। লিগপর্বে নেপালকে ৬-০ এবং ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। পরে ফাইনালে ভারতকেই ১-০ গোলে হারিয়ে ট্রফি লাভ করে। কিশোরী দলটির এই শিরোপা লাভ ভবিষ্যতে নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ায় সিনিয়র লেভেলে সেরা হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে যায়। 

নারী ফুটবল দলের ৬ সেপ্টেম্বর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু যাওয়ার কথা। নেপালে ৯ ও ১২ সেপ্টেম্বর দুটি প্রস্ততি ম্যাচ খেলে সাবিনা খাতুনরা ১৪ সেপ্টেম্বর যাবে উজবেকিস্তান। উজবেকিস্তানে এশিয়া কাপ বাছাইপর্বে খেলবে বাংলাদেশ। ‘জি’ গ্রুপে জর্দানের বিপক্ষে ১৯ সেপ্টেম্বর এবং ইরানের সঙ্গে ২২ সেপ্টেম্বর ভাগ্য পরীক্ষায় মাঠে নামবে বাংলাদেশের নারীরা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দলই ভারতে আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপের মূলপর্বের টিকিট লাভ করবে। মূলপর্বে সরাসরি খেলবে স্বাগতিক ভারত, গতবারের চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দল। আর বাছাইপর্ব থেকে ৮ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দলগুলো ওই ৪টি দলের সঙ্গে খেলবে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে। 

এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে ইরান ও জর্দানের সঙ্গে ভালো কিছু করতে কঠিন মনোবল থাকতে হবে। নেপালের প্রস্তুতি ম্যাচে ইতিবাচক ফলাফল বাছাইপর্বে ভালো করার পথ দেখাবে বলে আশা করা যায়। আর খেলোয়াড়দের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের সাফ শিরোপার কথা মাথায় থাকলে, হয়তো আশানুরূপ কিছু মিলেও যেতে পারে বাছাইপর্বে। সেটাও না হলে, একটি জয় কিংবা একটি ড্র’র দেখা মিললে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ তো খুঁজে পাবে নারী ফুটবলাররা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh