লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:০৩ পিএম
গাড়ির যন্ত্রাংশ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন যানবাহনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ দীর্ঘদিন পরে থাকায় নষ্ট ও চুরি হয়ে যাচ্ছে। উদ্যোগ নিয়ে সচল রাখলে বেঁচে যেত সরকারের কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।
জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী নামক এলাকায় তিস্তা নদীর উপর ৫৬টি জলকপাট দিয়ে নির্মিত ব্যারেজটি দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। এ প্রকল্পে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করা হয়। ওই ব্যারেজের নির্মাণ কাজ ১৯৭৯ সালে শুরু হয়ে ১৯৯০ সালে শেষ হয়। সেচ প্রকল্প ও ব্যারেজটি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ব্যারেজের কাজ শেষে দোয়ানী গোডাউনে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে ট্রাক, বেকার, ওযাগন, ঢালাই মেশিন সহ কোটি কোটি টাকা দামের দামী যানবাহন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। অযত্ন আর অবহেলায় এসব জিনিস দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় ব্যাবহার অনুপযোগী হয়েও পড়েছে।
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এসব দামী যানবাহন ও যন্ত্রাংশ মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় ব্যবহার ও চলাচল যোগ্য যানবাহন, যন্ত্রাংশগুলো রোদ বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে ও চুরি হয়ে যাচ্ছে। এক সময়ের এসব সচল আধুনিক জিনিসগুলো বর্তমানে অচল হয়ে গেছে।
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় দামী যানবাহন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহার অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে। এদিকে গোডাউনে পরে থাকা জিনিসগুলো জং ধরে ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার কারণে মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু উদ্যোগ নিয়ে সচল রাখলে বেঁচে যেত সরকারের কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিস্তা ব্যারেজের একজন কর্মচারী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রয়োজনে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকার জিনিস ও যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয় অথচ অর্থের অভাবে গোডাউনে পরে থাকা জিনিস ও যন্ত্রাংশসমূহ মেরামত করা হচ্ছে না। অথচ এসকল গাড়ি ট্রাক সচল থাকলে দেশের উন্নয়নের কাজে ব্যাবহার করা যেত। কোটি কোটি টাকা মূল্যের মূল্যবান জিনিসের জন্য দক্ষ জনবল না থাকায় তা ব্যবহার না করার ফলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হচ্ছে।
ব্যারেজের গোডাউনের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ব্যারেজের উপ সহকারী প্রকৌশলী বিলাস চন্দ্র এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফুদ্দৌলা বলেন, এ বিষয়ে একটি কমিটি হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।