বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:১৯ পিএম | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:০৯ পিএম

শাহ্ আব্দুল করিম

শাহ্ আব্দুল করিম

জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে মানুষ হয়ে তালাশ করলে, গাড়ি চলে না, আমি কূলহারা কলঙ্কিনী, আমি তোমার কলের গাড়ি, বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, কেমনে ভুলিব আমি বাঁচি না তারে ছাড়া, সখী কুঞ্জ সাজাও গো, আমি বাংলা মায়ের ছেলেসহ অসংখ্য জনপ্রিয় বাউল গান ও গণসংগীতের রচয়িতা বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর)।

১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর থেকে সর্বস্তরের বিশেষ করে সাধারণ মানুষের কাছে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেন বাউল শাহ্ আব্দুল করিম। জানা যায়, অসংখ্য গণজাগরণের গানের রচয়িতা শাহ্ আব্দুল করিম অত্যন্ত সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। গানে-গানে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় লড়াই করেছেন ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে। এ জন্য মৌলবাদীদের দ্বারা নানা লাঞ্ছনারও শিকার হয়েছিলেন তিনি। স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা নানা আন্দোলন সংগ্রামে গণমানুষের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন। ভাষার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে পথে পথে গান গেয়ে গণজাগরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক।

শাহ্ আব্দুল করিমের ভক্তরা বলেন, মহামারি করোনার কারণে গত দেড় বছর তারা গানের আসর কম করেছেন। এবার শাহ্ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকীতে গানের আসর বসবে উজানধলে। নানা অনুষ্ঠানে চলছে শাহ্ আব্দুল করিমের গান ও তাকে নিয়ে আলোচনা। শাহ আব্দুল করিম না থাকলেও গানে আর সুরে কখনো আনন্দ দেবে, কখনোবা গণজাগরণকে শাণিত করবে। আব্দুল করিমকে যেন শুদ্ধভাবে চর্চা করা হয় সে দাবি তাদের।

সংস্কৃতিকর্মী দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী বলেন, বাউল আব্দুল করিম গানে গানে বন্ধুর বন্দনা করেছেন তেমনি মানবমুক্তির জন্য সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আব্দুল করিমকে আমাদের বেশি বেশি চর্চা করতে হবে। তার গানের সাম্য, মানবিকতা ধারণ করলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যাবে। কিন্তু সম্প্রতি দেখেছি এই মরমি শিল্পীর গান বিকৃত করে গাওয়া হয়। যা আমাদের কষ্ট দেয়। আমরা চাই আব্দুল করিমের গান সঠিক ও শুদ্ধভাবে চর্চা করা হোক। 

শাহ আব্দুল করিম পরিষদের সভাপতি ও তার ছেলে বাউল শাহ নূর জালাল বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য আজ পর্যন্ত বাবার নামে দিরাইয়ে একটি সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। বাবার নামে একটি একাডেমি গড়ার জন্য অনেকবার আলোচনা হয়েছে। চিঠি চালাচালি হয়েছে কিন্তু এখনও জায়গা নির্ধারণ করা হয়নি।

বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ আমাদের বাড়িতে দুপুরে মিলাদ মাহফিল হবে। বিভিন্ন এলাকার বাউল ভক্ত আসবেন। রাতে বাউল আসর বসবে। বড় কোনো কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়নি।

সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল আবেদীন বলেন, বাউল আব্দুল করিমকে আমরা চর্চা করি। তার সৃষ্টি সারাবিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে রয়েছে। আব্দুল করিমের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রস্তাবিত শাহ্ আব্দুল করিম কমপ্লেক্সের প্রাথমিক কাজ চলছে। শিগগিরি এর অবকাঠামোর কাজও শুরু হবে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh