গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:৩০ পিএম
ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রকিবুল হাসানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে প্রায় তিন শতাধিক অভিভাবক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে মানববন্ধন হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, অ্যাসাইনমেন্টের নামে অবৈধভাবে টাকা নেওয়া, কোচিং বাণিজ্য, অন্য স্কুলের নামে ফরম পূরণ করাসহ বিভিন্ন দুর্নীতি করে আসছেন প্রধান শিক্ষক মো. রকিবুল হাসান।
অন্য স্কুলের নামে রেজিস্ট্রেশনের অভিযোগ
বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি বাবার নামে চালু করা ছখীউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও তিনি।
বোয়ালিয়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে গোপন রেখে বোয়ালিয়া স্কুলের প্রথম সারির ১২ জন শিক্ষার্থীকে তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ছখীউদ্দিন স্কুলের রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে দেন। বিষয়টি খোলাসা হয় যখন শিক্ষার্থীরা প্রশংসাপত্র হাতে পান।
অন্য স্কুলের নামে প্রশংসাপত্র দিলেও নিজেই স্বাক্ষর করেছেন রকিবুল হাসান। স্কুল কমিটির সভাপতি হয়ে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর দেওয়ার বিষয়টি গোঁজামিল বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। সার্টিফিকেটের বৈধতা নিয়েও সংশয় রয়েছে বোয়ালিয়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তাকে বোয়ালিয়া স্কুল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।
অভিভাবকদের ভাষ্য, রকিবুল হাসানের আরও বড় অনিয়ম-দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির রয়েছে। আমরা এসবের সুষ্ঠু তদন্ত এবং তার বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক রকিবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
বোয়ালিয়া স্কুলের সহকারী শিক্ষক রঞ্জিত দত্ত বলেন, প্রধান শিক্ষক যে কাজ করেছেন, তা বাচ্চাদের সাথে বেইমানি। ন্যক্কারজনক এমন কাজ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমার প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি সেটাই করেছি। কিন্তু তার সহযোগী উল্লেখ করে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক নয়।
লিখিত অভিযোগ
গত ১ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রথম মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে বোয়ালিয়া নেজামুদ্দিন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তখন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছিলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ১২ সেপ্টেম্বর পুনরায় মানববন্ধনের পাশাপাশি প্রশাসনকে সরাসরি লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রাথমিক একটি রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।