সাতক্ষীরায় ৪ জনকে হত্যা : একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:০৪ পিএম

এই চারজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছবি : সংগৃহীত

এই চারজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরা কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি রায়হানুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ১১টা ৪৫ মিনিটে সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। 

সাতক্ষীরা বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম কোন হত্যা মামলায় মাত্র ২০ কার্যদিবসে রায়ের আদেশ হয়েছে। 

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বলেন, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে আসামি রায়হানুর রহমান দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এরফলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মুত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। যুগান্তকারী রায় হয়েছে। এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। 

আসামিপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী এস এম হায়দার এ রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান। 

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান (৩৬) বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়াদাওয়া করতেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনো কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি স্ত্রী তালাক দেন রায়হানুরকে। সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো। এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবী সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয়ের সাথে ঘুমের বাড়ি খাওয়ায়  রায়হানুর। এরপর ভোর ৪টার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবেহত্যা করে। এ সময় তাদের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে তাকে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়।

এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদী হয়ে কারও নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেফতার করে। রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মন্ডলের কাছে নিজেই হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। 

নিহত পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে। 

গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় গত ১৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh