ওমর ফারুক, শরীয়তপুর
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:০৯ পিএম
শরীয়তপুরের সেতু আছে, নেই সংযোগ সড়ক
শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীর ওপরে সেতু আছে; কিন্তু সংযোগ সড়ক নেই।
জানা যায়, ভোজেশ্বর বন্দরের সঙ্গে জপসা ইউনিয়নসহ জাজিরা উপজেলার সঙ্গে যাতায়াত সহজ করতে কীর্তিনাশা নদীর ওপর ২০১৬ সালে ৯৯ মিটার দৈর্ঘের সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণের সঙ্গে দুই প্রান্তে ৪৬৫ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ পায় কামারজানি ব্রোজেন ও আনোয়ারা জেভি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সেতুর নির্মাণ শেষ হলেও জমি সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে যায় সংযোগ সড়কের কাজ। তাই সেতুটি ব্যবহার করতে পারছেন না স্থানীয়রা। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরার দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষ।
জমি সংক্রান্ত জটিলতার অজুহাতে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকা সংযোগ সড়ক নির্মাণ ছাড়াই সংশোধিত প্রাক্কলনে অন্য কাজ করে বিল উত্তোলন করে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে ভিন্ন প্রকল্পে সংযোগ সড়ক নির্মাণে সরকারকে নতুন করে ব্যয় করতে হচ্ছে বাড়তি ১৩ কোটি টাকা।
নড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, সেতুর নির্মাণ শেষ হলেও জমি সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে যায় সংযোগ সড়কের কাজ। সংযোগ সড়কের পরিবর্তে ঠিকাদারকে দিয়ে ১০ মিটারের একটি বক্সকালভার্ট ও সেতুর দুই প্রান্তে ৮০ মিটার করে ১৬০ মিটার নদীর তীর প্রতিরক্ষার কাজ করিয়ে পুরো বিল দিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় কৃষিপণ্য পরিবহনসহ ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় ব্যয় করতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ এবং অপচয় হচ্ছে সময়ের। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।
জপসা ইউনিয়নের বাসিন্দা অটোরিকশা চালক আরিফ বেপারী আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ছোট্ট একটু পথের ভেতর গাড়ি (অটোরিকশা) চালাই। ওপার যেতে পারলে আমাদের উপার্জন বাড়ত। ভাড়া নিয়ে দূরে যেতে পারতাম। সেতুটি চালু হয়ে গেলে আমাদের উপকার হবে।
ভোজেশ্বরের বাসিন্দা বন্যা বেগম বলেন, সেতু দিয়ে উপকার পেলাম না। ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছে; ২০২১ সাল চলে, এখনো নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হয়। আমার ওপারে বাড়ি থাকলেও এপারে ভাড়া থাকি। রাত ৯টার পর কোনো নৌকা থাকে না। সেতু যদি কাজেই না আসে, তাহলে বানিয়েছে কেন?
নড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাহাবউদ্দিন খান বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং ভূমি জটিলতায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্ভব হয়নি। জমি জটিলতার কারণে এখন আর ই ওয়াল প্রযুক্তিতে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এটা একটা নতুন প্রযুক্তি। অল্প জায়গায় সড়ক নির্মাণ সম্ভব। নতুন প্রযুক্তিতে কাজ করায় কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমরা বসে নেই। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে।