চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৫৪ পিএম
কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার ঘাট
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মাঝিরা বাড়তি মাশুল আদায়ের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছেন। সোমবার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন পার হলেও সংকটের কোনো সুরাহা মেলেনি। তবে মঙ্গলবার সাম্পান মাঝিরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয় ঘেরাও করবেন বলে জানা গেছে। মাঝিদের ধর্মঘটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার ঘাট দিয়ে পার হওয়া পোশাকশিল্পের শ্রমিক, সবজিচাষি ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মাঝিদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ঘাটটি ইজারা না দিয়ে স্থানীয় কিছু লোক দিয়ে জনপ্রতি ৫ টাকা করে আদায় করছে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়রকে ১৫ দিন আগে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যার কারণে তারা ধর্মঘটের ডাক দেন। তৃতীয় দিনের মতো বাংলাবাজার ঘাট থেকে সাম্পান চালানো বন্ধ রাখেন মাঝিরা।
চসিক ইজারা না দিলে একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে জনপ্রতি ২ টাকা করে টোল আদায় করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু চসিক তা না করে স্থানীয় লোক দিয়ে টোল আদায় করছে। তারা ২ টাকার স্থলে ৫ টাকা করে নিচ্ছে।
কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার সাম্পান কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা সাংবাদিক আলীউর রহমান সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, ‘কর্ণফুলীতে যত ঘাট আছে, সবগুলো সিটি করপোরেশন ইজারা দেয়, মাঝিরা নেয়। মাঝিরা যাত্রীপ্রতি দুই টাকা করে সিটি করপোরেশনের জন্য রাখে। আর যে ঘাটে টোল কম সে ঘাটে একটাকা করে সিটি করপোরেশনকে দেয়। কিন্তু এই ঘাটটি সিটি করপোরেশন ইজারা না দিয়ে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীকে দিয়ে দিয়েছে। তারা চাঁদা তুলে কিছু সিটি করপোরেশনকে দেয়। আর কিছু ওরা নিয়ে নেয়। এটি নিয়ে গত সপ্তাহে আমরা সরাসরি মেয়রকে লিখিত অভিযোগ করেছি। মেয়র সেটা পাসও করেছেন। এর পরও এ ব্যাপারে কোনো অ্যাকশান নেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ইছানগর বাংলাবাজার ঘাটে সাম্পান মাঝিদের ধর্মঘট চলছে। আজকের মধ্যে সমাধান না হলে কাল সিটি করপোরেশন ঘেরাও করবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি লোকমান দয়াল ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ।’
ইছানগর বাংলাবাজার ঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সভাপতি মো. লোকমান বলেন, ‘ঘাটটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ইজারা না দিয়ে ২ টাকার বদলে ৫ টাকা আদায় করছে। এটি বন্ধ করার জন্য চসিককে চিঠি দিয়েছি। তবুও চসিক স্থানীয় লোক দিয়ে যাত্রী প্রতি ৫ টাকা করে আদায় করছে। এটি বন্ধ করার জন্য মাঝিরা ধর্মঘট শুরু করেন। আমরা মনে করি, ঘাটটি ইজারা না দেওয়ার ক্ষেত্রে চসিকের নিজস্ব লোক জড়িত আছে। বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।