ভৈরব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:১৯ পিএম
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মরদেহ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ধর্ষণের শিকার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা নামে এক (বুদ্ধি প্রতিবন্ধী) কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিশোরীর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহত কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। নিহত কল্পনা শহরের আমলাপাড়া এলাকার মোশাররফ মিয়ার মেয়ে। কল্পনার মৃত্যুর খবর পেয়ে অভিযুক্ত আশিক ও তার পরিবারের সদস্যরা গা-ঢাকা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, অভাব আর টানপোড়ানের সংসারে বেড়ে ওঠা (বুদ্ধি প্রতিবন্ধী) কিশোরী কল্পনার। বয়স ১৫ বছরে পা রেখেছে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা সংসার নিয়ে সৎ মায়ের বসবাস করছেন। ফলে আমলাপাড়া এলাকার ছগির মিয়া নামে এক বাড়ির মালিকের অসুস্থ মায়ের সেবা-যত্নসহ ফুট-ফরমায়েশের কাজ করতো কিশোরী কল্পনা। বাড়ির মালিকের অসুস্থ মায়ের সাথেই দুইতলায় থাকতেন কল্পনা। আর নিচতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো ১৮ বছর বয়সী আশিক ও তার পরিবার। তাদের গ্রামের বাড়ি একই জেলার কটিয়াদী উপজেলায়।
নিহত কল্পনার বাবা মোশারফ মিয়া জানায়, আশিকের পরিবার নিচতলায় থাকার সুবাদে আশিকের সাথে কল্পনার পরিচয় হয়। আর পরিচয় থেকে প্রেম। পরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী কল্পনাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে আশিক। ফলে এক সময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে কল্পনা। কিন্তু পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে অস্বীকৃতি জানায় আশিক ও তার পরিবার। পরে বিচারের আশায় ও স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে মাতবরের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও গরীব বলে বিচার পায়নি। মেলেনি স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতি। নিরুপায় হয়ে গেলে ২৬ আগস্ট কল্পনা বাদী হয়ে অভিযুক্ত আশিককে প্রধান আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে তিনজনের নামে মামলা দায়ের করেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, হঠাৎ করে গত সোমবার সকালে কল্পনা অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ধর্ষণের শিকার ও ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত আশিক ও তার পরিবার।
এ প্রসঙ্গে ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মাহফুজ হাসান সিদ্দিকী বলেন, কিছুদিন আগে কল্পনা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কল্পনা হাসপাতালে মারা যাবার সংবাদ পাই। পরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এছাড়াও পুলিশ অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।