শোবিজে হ্যাট্রিক বিয়ের ধুম

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০৩ পিএম

 মাহি ও অপূর্ব

মাহি ও অপূর্ব

শোবিজ অঙ্গনে যেন তারকাদের হ্যাট্রিক বিয়ের ধুম লেগেছে। তৃতীয় বিয়ে করে অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে আলোচনায় এসেছেন বেশ কয়েকজন তারকা শিল্পী। 

দেশীয় সংস্কৃতি অঙ্গনে বিয়ে ভাঙার ঘটনা নতুন নয়। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, মনের অমিল থেকে সাংসারিক কলহ আর এরপরই বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তারকাদের। প্রথম বিয়ে ভাঙার পর দ্বিতীয় বিয়েও ভেঙেছে অনেক তারকার। তাই কোনো কোনো তারকা একবার-দুবার নয়, কবুল বলেছেন তিনবার। 

সর্বশেষ চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি তৃতীয়বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। এছাড়াও এই তালিকায় আছেন ছোট পর্দার অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি, হাবিব ওয়াহিদ ও অভিনেত্রী শমী কায়সার।


মাহিয়া মাহি

নীরবতা ভেঙ্গে অবশেষে বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে রকিব সরকারের সাথে একটি ছবি শেয়ার করে বিয়ের কথা জানান এই নায়িকা। এরই মধ্যে তৃতীয় বিয়ের পরপরই তিনি দুই সন্তানের মা বনে যান। এর মধ্যে একটি ছেলে, একটি মেয়ে। ছেলের নাম সোয়াইব ও মেয়ের নাম সাইয়ারা। সন্তান দু’টির বাবা রাজনীতিক ও গাড়ি ব্যবসায়ী রকিব সরকার।

২০১৬ সালের ২৫ মে জমকালো আয়োজনে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে বিয়ে করেছিলেন মাহি। চলতি বছরের ২৪ মে তাদের পঞ্চম বিবাহবার্ষিকীর আগমুহূর্তে মাহি জানান, একসঙ্গে থাকছেন না আর তারা। অন্যদিকে অপুও জানান তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে।

তারও আগে, ২০১৫ সালের ১৫ মে কাজী মো. সালাউদ্দিন ম্যারেজ রেজিস্টারের মাধ্যমে শাওন নামের একজনকে বিয়ে করেন মাহি। ২০১৬ সালে অপুকে বিয়ের পর শাওনের সাথে বিয়ের বিষয়টি আলোচনায় আসে। শাওনের সাথে মাহির ছবিও ফাঁস হয়। তখন মাহি সাইবার ক্রাইমে মামলা করেন। তবে সেই মামলার প্রতিবেদনে শাওনের সাথে মাহির বিয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়।


জিয়াউল ফারুক অপূর্ব

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে গত ১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন ছোট পর্দার অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বও। পরের দিন (২ সেপ্টেম্বর) দুই পরিবারের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শাম্মা দেওয়ানকে বিয়ে করেন এই অভিনেতা। শাম্মার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর তিনি নিঃসঙ্গ ছিলেন। কিন্তু কিছুদিন আগে অপূর্বর সঙ্গে তার প্রেম-প্রণয় গড়ে ওঠে। সেই থেকেই তিনি অপূর্বর সঙ্গে পরিণয়ের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছেন। তার ১৩ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট পালিয়ে গিয়ে অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভাকে বিয়ে করেছিলেন অপূর্ব। যদিও এর পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাদের। ওই বছরের ১৪ জুলাই অপূর্ব পারিবারিকভাবে নাজিয়া হাসান অদিতিকে বিয়ে করেন। অপূর্ব-অদিতি দম্পতির আয়াশ নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বর্তমানে আয়াশ মায়ের কাছেই থাকছেন। অন্যদিকে অপূর্ব যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে।


নাজমুন মুনিরা ন্যানসি

জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করলেন কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি ও গীতিকবি মহসীন মেহেদী। তারা এখন দম্পতি। আগস্টের শেষের দিকে দুইয়ে মিলে এক হন তারা। গানের সুবাদে মেহেদীর সঙ্গে ন্যানসির পরিচয় আগে থেকেই ছিল। গত বছর মহসীনের লেখা ‘এমন একটা মন’ শিরোনামের একটি গানে কণ্ঠ দেন এই গায়িকা। এরপর থেকেই দু’জনের মধ্যে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। 

এটি ন্যানসির তৃতীয় বিয়ে। এর আগে, ২০১৩ সালের ৪ মার্চ নাজিমুজ্জামান জায়েদকে বিয়ে করেছিলেন গায়িকা। তারও আগে ২০০৬ সালে ভালোবেসে তিনি বিয়ে করেন ব্যবসায়ী আবু সাঈদ সৌরভকে। ২০১২ সালের ২৪ মে তাদের বিচ্ছেদ হয়।


হাবিব ওয়াহিদ

চলতি বছরের শুরুতে বিয়ের খবর দেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ। গত ১২ জানুয়ারি আফসানা চৌধুরী শিপাকে তিনি বিয়ে করেন। এটি তার তৃতীয় বিয়ে। হাবিবের স্ত্রী শিপা ইডেন মহিলা কলেজের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্রী। 

পপস্টার ফেরদৌস ওয়াহিদের পুত্র হাবিব ২০০৩ সালে প্রথম বিয়ে করেন লুবায়নাকে। সে বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। এরপর হাবিব ২০১১ সালের ১২ অক্টোবর পারিবারিক পছন্দে বিয়ে করেন চট্টগ্রামের মেয়ে রেহানকে। সে সংসারও ভেঙে যায় ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি।


শমী কায়সার

নন্দিত অভিনেত্রী শমী কায়সার। ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রেজা আমিন সুমন নামের এক ব্যবসায়ীর সাথে তার বিয়ের আকদ সম্পন্ন হয়। এরপর ৭ অক্টোবর গায়ে হলুদ ও ৯ অক্টোবর বিয়ের রিসিপশন হয়। ঘরোয়া পরিবেশে বিয়ের এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বর-কনের দুই পরিবারের সদস্য ও কাছের মানুষেরা। 

এটি শমী কায়সারের তৃতীয় বিয়ে ও রেজা আমিন সুমনের দ্বিতীয় বিয়ে। ১৯৯৯ সালে ভারতীয় নাগরিক ব্যবসায়ী-নির্মাতা অর্ণব ব্যানার্জী রিঙ্গোকে বিয়ে করেছিলেন শমী। দুই বছর পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ২৪ জুলাই মোহাম্মদ আরাফাতকে বিয়ে করেন। নানা কারণে সেই সংসার টেকেনি।

শোবিজে কয়েক বছর ধরে বেড়েছে বিবাহ বিচ্ছেদ ও একাধিক বিয়ের সংখ্যা। রঙিন পর্দার আড়ালে থাকে হাজারও মন ভাঙার যন্ত্রণা, চাপা দুঃখ আর বিষাদ। যাদের আমরা পর্দায় হাস্যোজ্জ্বল দেখি ব্যক্তিগত জীবনে তারা কতটুকু সুখী? সেই প্রশ্ন অনেকেরই। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh