ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রীর রিমান্ড শুনানিতে যা হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলায় প্রত্যেকের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) গুলশান থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর ওহিদুল ইসলাম আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, রাসেল ও শামীমা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের লিডার এবং অত্যন্ত ধুরন্ধর ও কৌশলী। আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে একেক সময় একেক রকম কথাবার্তা বলেছেন। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর কৌশলে এড়িয়ে যান তারা। আসামিরা তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা প্রতারকসহ ইভ্যালির পণ্য বিক্রয়ের নামে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এক গ্রাহকের তিন লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা আত্মসাৎ করেন। তাই আসামিদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারসহ তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করতে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান আসাদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদনে বলেন, ইভ্যালি গ্রাহকের কাছ থেকে পণ্যের টাকা নিয়ে তা সাপ্লাইয়ারকে দেয়। এরপর সাপ্লাইয়ার পণ্য দিলে ইভ্যালি গ্রাহককে সেই পণ্য গ্রাহককে বুঝিয়ে দেয়। বর্তমান করোনার মহামারির কারণে সারা বিশ্বের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে। সাপ্লাইয়ার সময়মতো মালামাল দিতে পারেনি বলে ডেলিভারিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ইভ্যালি অনেককে পণ্যের টাকা ফেরত দিয়েছে এবং অনেকের কাছ থেকে আবার সময় চেয়েছে। তবে টাকা দেবে না এমন কথা কখনো বলেনি। 

তিনি বলেন, ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার মামলা করা হয়েছে; তবে এ অভিযোগগুলো ঠিক নয়। তারা টাকা দিয়ে দেবে। তবে কিছু সময় লাগবে তাদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালিকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে। এরপর ইভ্যালি সেই চিঠির জবাব দেয়। গ্রাহকের টাকা ফেরতের বিষয়ে ৬ মাস সময় নিয়েছে তারা। ইভ্যালির উদ্দেশ্য যদি প্রতারণা হতো তাহলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির জবাব তারা দিতো না।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবদুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ইভ্যালি বিজ্ঞাপন দিয়ে লাখ লাখ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও চিট করেছে। এই মামলার বাদী টাকা পরিশোধের সাত মাস পরেও অর্ডার দেওয়া পণ্য হাতে পাননি। পণ্য তো দিচ্ছে না তাদের কাছে টাকা চাওয়ার কথা বললে তারা টাকাও দিচ্ছে না। বরং তারা মামলার বাদীকে হুমকি দেয়। তাই তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রত্যেক আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইভ্যালি এমডি রাসেলের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে এ দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর র‌্যাবের সাদা গাড়িতে করে তাদের নেওয়া হয় র‌্যাব সদর দপ্তরে, সেখানেই চলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh