বাজারে ক্রেতা কম, বিপাকে পাটচাষিরা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:০৫ পিএম | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:০৮ পিএম

অষ্টাধার বাজার ময়মনসিংহ অঞ্চলে পাটের বাজারের জন্য বিখ্যাত

অষ্টাধার বাজার ময়মনসিংহ অঞ্চলে পাটের বাজারের জন্য বিখ্যাত

ময়মনসিংহসহ তিন জেলার পাট ক্রয়-বিক্রয়ের সবচেয়ে বড় বাজার অষ্টধারে ন্যায্য দামে পাট বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে পাট ব্যবসায়ীদের দাবি লসের শঙ্কায় তারা পাট কিনতে পারছেন না। অনেকেই পাট কিনেও বিক্রি করতে পারছেন না। পাটের বাজারে সরকারের নজরদারি কামনা করেন ব্যবসায়ীরা। 

ময়মনসিংহের সদর উপজেলার অষ্টধার ইউনিয়নে অষ্টাধার বাজার ময়মনসিংহ অঞ্চলে পাটের বাজারের জন্য বিখ্যাত। এ বাজারে ময়মনসিংহ ছাড়াও জামালপুর, শেরপুর জেলার ব্যবসায়ীরা পাট ক্রয়-বিক্রয় করেন। প্রতি শুক্র এবং মঙ্গলবার সকাল ৮ থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত এ বাজারে পাট ক্রয়-বিক্রয় হয়। তবে বাজারে চরাঞ্চলের শতশত কৃষক পাট নিয়ে আসলেও ক্রেতা তেমন না থাকায় কিছুটা বিপাকে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। 

এ বাজারে চার জাতের পাট যেমন- কেনাফ, তুষা, মেস্তা এবং দেশি পাট ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে কেনাফ পাট একটু বেশি দামি। গুণে মানেও ভালো। 


জামালপুর সদরের কৃষক জাকিরুল ইসলাম বলেন, সাত মণ পাট এনে ২৭০০ টাকা ধরে বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে পাটের বাজার ছিলো ৩ হাজার টাকা। যতোই দিন যাচ্ছে পাটের দাম কমছে। কৃষক হওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়ছি। পাটের দাম ২ হাজার টাকা হলেও আমাদের বিক্রি করতে হবে। 

সদর উপজেলার সেনেরচর গ্রামের হাসান আলী বলেন, এবছর ৬০ থেকে ৭০ মণ পাট হয়েছে। গত বছর পাটের দামও ভালো পাওয়ায় ব্যাপারীদের লাভ হয়েছে। এবার ফ্যাক্টরিতে পাট না কেনায় ব্যাপারীরা পাট কিনছে না। তাই আমরা সমস্যায় আছি। 

নকলা উপজেলা আদর্শ গ্রামের কৃষক ইমান আলী বলেন, পাটের দাম মোটামুটি ভালো আছে। আমরা কৃষক দাম একটু বেশি পেলে ভালো লাগে দাম কমলে সাময়িক সমস্যা হয়। 


শেরপুরের নকলা উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়ার কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ১০ কাটা জমিতে ২০ মণ পাট হয়েছে। খরচ হয়েছে ২৫ হাজারের মতো। পাট প্রায় ৫৫ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারব। এবছর দাম একটু কম তাই লাভও কম হচ্ছে। 

পাট ব্যবসায়ীরা উমা শংকর প্রসাদ বলেন, ১৫ বছর ধরে পাট ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছি। সরকার পাট না কিনলে বাজারের অবস্থা ভালো হবে না। অনেক কোম্পানির কাছে চার পাঁচ বছর ধরে পাটের টাকা পড়ে রয়েছে, তুলতে পারছি না। এবছর কিছু পাট কিনে স্থানীয় জনতা কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছি। 

নিকুঞ্জ পাল বলেন, পাকিস্তান আমল থেকেই পাট ব্যবসা করছি। গত কয়েক বছর ধরে পাটের বাজার খুবই খারাপ যাচ্ছে। পাট কিনে স্টক করে বিপাকে আছি। এ ব্যবসা ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। 


সুশীল প্রসাদ বলেন, গত বছরের লাভের আশায় এ বছর ৮০০ মণ পাট কিনে বিপাকে পড়ছি। ৩ হাজার ৩০০ টাকা ধরে পাট কিনলেও এখন দাম পড়ে ২৮০০ থেকে ২৯০০ টাকা এসেছে। সরকার পাট না কিনলে দাম উঠার সম্ভাবনা নেই। 

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতিউজ্জামান বলেন, জেলায় এবছর ৫ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। চাহিদা এবং যোগানের উপর নির্ভর করে পাটের দাম উঠা নামা করছে। সামনে হয়তো দাম বাড়তেও পারে। তবে বিষয়গুলো সরকারকে অবহিত করা হবে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh