লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০৭:১৯ পিএম
ব্যাক কর্মকর্তা শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৪০জন কৃষকের নামে প্রায় এক কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন আজিজুর রহমান নামে ব্যাংক কর্মকর্তা। টাকা ফেরত ও ব্যাক কর্মকর্তা শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর ) দুপুরে উপজেলার রাজশাহী কৃষি ব্যাংক হাতীবান্ধা শাখার সামনে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত আজিজুর রহমান রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক হাতীবান্ধা শাখার সিনিয়র অফিসার (মাঠ)।
মানববন্ধনে কৃষকরা বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান প্রতারণা করে আমাদের প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ব্যাংকে আসছেন না। লিখিত অভিযোগ করেও আমরা কোন সুফল পাচ্ছি না। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং অতি দ্রুত আমাদের ঋণের টাকা ফেরত না দিলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি পালন করারও হুশিয়ারি দেন কৃষকরা।
মানববন্ধনে থেকে বক্তব্যে উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের ভুক্তভোগী কৃষক আলতাব হোসেন জানান, আমার জায়গা জমির সকল কাগজপত্র ব্যাংকের কাছে জমা দিয়ে তিন লাখ টাকা ঋণের আবেদন করি। কিন্তু ওই ব্যাংক কর্মকর্তা ৩ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে দেয়ার কথা বলে আত্মসাৎ করেছে। ব্যাংকের ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক হাতীবান্ধা শাখার সিনিয়র অফিসার (মাঠ) আজিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক হাতীবান্ধা শাখার ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, ৪০ জন গ্রাহক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি গত ১মাস ধরে ব্যাংকে আসছেন না। তাকে বারবার অফিসে আসার নোটিশ দিয়েও অফিসে করাতে পারিনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক লালমনিরহাট জোনাল ম্যানেজার মাহিদুল ইসলাম বলেন, আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তিনি অফিস করছেন না এবং আমাদের সাথে যোগাযোগও করছেন না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, এক যোগে পাওয়া ওই ৪০জন কৃষকের নামে করা ঋণের টাকা আত্মসাৎ করেন ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান। ব্যাংকে খবর নিয়ে গ্রাহকরা জানতে পারে তাদের নামে ঋণের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পরে অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাকে টাকার জন্য চাপ দিলে তিনি কৌশলে কয়েকজনকে অল্প কিছু করে টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা সময় নিলেও সেই সময় পেরিয়ে যায়। পরে টাকা ফেরত না পেয়ে গ্রাহকরা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক হাতীবান্ধা শাখার ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের পর থেকে প্রায় এক মাস ধরে ব্যাংকে আসছেন না ওই কর্মকর্তা। এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আজিজুর ইসলামকে বারবার অফিসে আসার নোটিশ দিলেও তিনি অফিস করছেন না এবং নোটিশের কোনো জবাব দিচ্ছেন না।