কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯:৪৩ পিএম
প্রতীকী ছবি
স্বামীর নির্যাতনে বিষপান করা স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে রেখে স্বামী পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের তেলখোলা এলাকায়। গত ১৬ অক্টোবর (শনিবার) এ বিষপানের ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের পৈত্রিক পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের উত্তর ঘুমধুম আজুখাইয়া গ্রামের মো. আলম মাহাদুর ষোড়শী কন্যা হুমায়রা বেগমের সাথে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের তেলখোলা গ্রামের সোলতান আহমদের ছেলে মো. আবদুল্লাহর (২২) সাথে ইসলামী সাড়ে ৩ মাস পূর্বে বিয়ে হয়।
বিয়ের কয়েকদিন পর স্বামী আবদুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুক দাবিসহ নানা বিষয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করত এবং কথায়-কথায় নানা কথাবার্তায় কোঠা দিত হুমায়রা বেগমকে।ভবিষ্যৎ সুখের আশায় হুমায়রা স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন নিরবে সহ্য করে আসছিল।
গত ২/৩ দিন পূর্বেও স্বামী আবদুল্লাহ হুমায়রাকে দফায়-দফায় দুই-তিন বার মারধর করে বলে সে তার মা কে জানিয়েছিল।
স্বামী আবদুল্লাহর নির্যাতন ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন ও কোঠা দেয়া কথা থেকে পরিত্রাণ পেতে গত ১৬ অক্টোবর (শনিবার) বিকেলে বিষপান করলে তাৎক্ষনিক তাকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতাল পরে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার বেগতিক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক হুমায়রাকে চিকিৎসা দিলেও সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। হুমায়রা মারা যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে মুহূর্তেই হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে স্বামী আবদুল্লাহ পালিয়ে যায়।
এরপর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে হুমায়রার মৃতদেহ পৈত্রিক বাড়ি ঘুমধুমের আজুখাইয়া গ্রামে নিয়ে যায়। ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার দাফন কার্য সম্পন্ন হয়।
নিহত হুমায়রা বেগমের পিতা মো. আলম মাহাদু জানান, আমার মেয়ে হুমায়রা শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার, তাকে মেরে বিষপান করিয়েছে কিনা সন্দেহ রয়েছে। হুমায়রা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিষপান করতে পারে এমন ধারণাও করেন। মাহাদু আরো জানান, চিকিৎসাকালীন সময়ে হুমায়রা বেগমের স্বামী পাশে থাকলেও মারা যাবার পরপরই আবদুল্লাহ পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করবেন বলেও তিনি জানান।
ঘুমধুম ইউপি’র আজুখাইয়া গ্রামের স্থানীয় মেম্বার আবুল কালাম জানান,হুমায়রা বেগম শান্ত স্বভাবের ভাল মেয়ে ছিলো, তাকে স্বামী নির্যাতন করায় অপমানে বিষপান করেছে, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও শুনেছি।
উখিয়া থানার ওসি তদন্ত গাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি, কিন্তু কেউ অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।