ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে : মৌটুসি

মোহাম্মদ তারেক

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২১, ১১:০০ এএম | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১, ১১:০৭ এএম

মৌটুসি বিশ্বাস

মৌটুসি বিশ্বাস

‘শিশুদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য অনেক গ্রুমিং সেশন করেছি। মক ও ড্রাই শুটের পর মূল অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার কাজ করেছি। অনুষ্ঠানটির জন্য পরিশ্রম করে আমার ভালো লেগেছে। প্রায় দুই বছর পর উপস্থাপনায় ফেরা প্রসঙ্গে এভাবেই বললেন নন্দিত অভিনেত্রী মৌটুসি বিশ্বাস।

দুরন্ত টেলিভিশনের ‘বানান মানে স্পেলিং’ রিয়েলিটি শোর সঞ্চালনা করেছেন তিনি। শিগগিরই মনিরুল ইসলাম শিপন পরিচালিত সাতাশ পর্বের অনুষ্ঠানটি প্রচার হবে। সারাদেশ থেকে বাছাইকৃত ৬৪ জন শিশুকে নিয়ে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে বেশ উচ্ছ্বসিত মৌটুসি। তার ভাষ্যে, আমার উপস্থাপনা শুরু হয় একুশে টেলিভিশনে ট্র্যাভেল শোর মাধ্যমে ২০০০ সালের দিকে। এরপর কখনোই উপস্থাপনায় নিয়মিত ছিলাম না। গৎবাঁধা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে ভালো লাগে না। তবে মাঝে মাঝে করেছি। সর্বশেষ একটি রান্নার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছি। শুরুতে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করে ভালো লাগছিল। পরে একটি পর্যায়ে এসে দেখলাম তারা যেভাবে কাজ করছে, সেভাবে আমার সন্তুষ্টির জায়গা আর থাকছে না। যে কারণে সেটা আর করিনি।


তিনি আরও বলেন, দুরন্ত টেলিভিশনের এ রিয়েলিটি শো করে তৃপ্তি পেয়েছি। কাজটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ শুটিংয়ে শিশুদের পাশাপাশি অনেক ডিভাইস নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। উচ্চারণের দিকেও নজর রাখতে হয়েছে। এই আয়োজনে দুরন্ত টেলিভিশনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গও যুক্ত ছিলেন। তারা খুবই আধুনিক সেটে শুটিং করেছেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে ছিল সজাগ দৃষ্টি। দুর্দান্ত টিম ওয়ার্ক ছিল। দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ সময়ে এমন একটি রিয়েলিটি শো ভীষণ প্রয়োজন ছিল। 

উপস্থাপনায় ফিরলেও অভিনয় নিয়ে এখন ভীষণ খুঁতখুঁতে মৌটুসি। গত দুই বছরে মাত্র দুটি ফিকশনে দেখা গেছে তাকে। 

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার কাছে সিনেমা ও ওয়েব সিরিজের প্রচুর প্রস্তাব আসে। যেসব কাজ আমার ভেতর থেকে মনে হয় করা উচিত, সেগুলো করছি। গত দেড় বছরে মাত্র দুটি শর্ট ফিল্মে কাজ করেছি। যেসব কাজে মন সায় দেয় না, সেসব কাজ বিনয়ের সঙ্গে মানা করে দেই। একই ধাঁচের গল্পে কাজ করতে ইচ্ছে করে না। আমি চাইলেই ভালো কাজগুলো করতে পারব না। আমার কথা নির্মাতাদের ভাবতে হবে। যে কাজগুলো করার মতো মনে হয় সেগুলো করছি, বাকিগুলো না করে দিচ্ছি। 

মৌটুসি করোনাকালে নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদের অভিনয়ের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। এ কর্মশালায় অংশ নিয়ে নিজের মধ্যে পরিবর্তন টের পাচ্ছেন তিনি। 


মৌটুসি বলেন, সাত দিনের কর্মশালা শেষে অষ্টম দিন মনে হলো ভাবনার দরজা জানালা খুলে গেছে। সাত দিনের কর্মশালা মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা জলের মতো মনে হয়েছিল। জামিল স্যার নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। স্যারের এরকম ছোট ছোট কর্মশালায় আরও অংশ নিতে চাই। আমরা তো আবার শিক্ষার্থী হয়ে ভর্তি হতে পারব না। তাই ছোট ছোট কর্মশালা করলে আমাদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। একজন জামিল আহমেদ স্যার দেওয়ার জন্য তৈরি। আমাদের গ্রহণ করতে হবে এবং ধারণ করতে হবে। আমি আগে থেকেই স্যারের ভক্ত ছিলাম। তার ক্লাস পাব, তা কোনোদিন আশা করিনি। কর্মশালাটি করার পর স্যারের কাছ থেকে শেখার লোভ বেড়ে গেছে। 

কর্মশালায় মৌটুসির সঙ্গে ছিলেন এ প্রজন্মের পরিচিত মুখ ইয়াশ রোহান ও নাজিফা তুষি। তাদের মাঝে শেখার তাড়না দেখেছেন মৌটুসি। তিনি কর্মশালার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে বলেন, আমরা এক কাতারের শিক্ষার্থী ছিলাম। সিনিয়র-জুনিয়র বিষয়টা একদম ছিল না। ওখানে থিয়েটারকর্মী ছিলেন। টিভিসি নির্মাতা রাকা ও কাস্টিং ডিরেক্টর মিতি ছিলেন। আমাকে কেউ সিনিয়র হিসেবে দেখেনি। বন্ধুর মতো আমরা একসঙ্গে কর্মশালা করেছি। বিষয়টা ভালো লেগেছে। আমাদের মধ্যে চমৎকার একটি বন্ধন তৈরি হয়েছে। আমাদের ব্যাচের মাঝে ইতিবাচক একটি শক্তি কাজ করত। স্যার মানুষের মাঝে ইতিবাচক শক্তি দিতে পারেন। স্যারের ছাত্রী মোহসিনা ও থিয়েটারকর্মী এম এস রানা কর্মশালাটি সম্পন্ন করতে দারুণভাবে সহযোগিতা করেছেন। এ সাত দিনের অভিজ্ঞতা আমার জানার তৃষ্ণা বাড়িয়ে দিয়েছে। 

মৌটুসি মনে করেন শেখার কোনো বয়স নেই। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে গিটার বাজানো শিখেছেন। তিনি সাইকেল চালাতেও পারেন অল্প কয়েক দিনের চর্চায়। স্কুটি চালানোও শিখেছেন এ অভিনেত্রী। এখন ভাবছেন আর কী শেখা যায়। তার ভাষ্য, পরিশ্রমের বিকল্প নেই। শারীরিক পরিশ্রম সবসময় করা হয় না; কিন্তু মানসিক পরিশ্রম আমি প্রতিনিয়ত করতে থাকি। না শিখলে মানসিকভাবে বুড়িয়ে যেতে হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh