লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২১, ১২:৫৫ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের দাম কোনোভাবেই লাগাম টানতে পারছে না সরকার। জরুরি নিত্যপণ্য চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা-ময়দা, পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়েই চলেছে। একইসঙ্গে শীতকালীন সবজি বাজারে উঠলেও সেখানেও অস্বস্তি। ফলে নিত্যদিনের বাজার খরচ মেটাতে দিশাহারা নিম্নমধ্যবিত্তরা। আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছে না কিছুতেই। এতে করে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্নবিত্তদের। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

অন্যদিকে, বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। প্রতিকেজি আলু খুচরা বাজারে ২২ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪ থেকে ৫ দিন আগেও দাম ছিল ১৬ থেকে ২০ টাকা। জানা গেছে, বাজারে হঠাৎ করে আলুর টান পড়েছে। ফলে পাইকারিতে দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

কারওয়ান বাজারের একজন বিক্রেতা বলেন, ৫ থেকে ৬ দিন ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। বাজারে আগের চেয়ে কম পরিমাণে আলু দিচ্ছেন পাইকার ও কোল্ডস্টোরেজের মালিকেরা। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা তো কমেনি। এ কারণে দাম বাড়ছে আলুর।

এদিকে, আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পর গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে ছিল ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। দাম নেমে আসে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়েছে কেজিতে তিন টাকার মতো। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।

মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, আয়ের চেয়ে খরচ বেড়েছে অনেক। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।

চালের দামও বেড়েছে কিছুটা। টিসিবির তথ্য মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট স্বর্ণা ও বিআর-২৮ জাতীয় চালের দাম প্রতি কেজিতে দুই টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে এই চালের দর ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। নাজিরশাইলের কেজিতেও বেড়েছে দুই টাকা। গেল সপ্তাহে ৫৬ থেকে ৬৬ টাকা বিক্রি হলেও বিক্রেতারা এখন দাম রাখছেন ৫৮ থেকে ৬৮ টাকা। আর এক টাকা বেড়ে মিনিকেট চালের দর দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৫৬ টাকায়। আটার কেজি ৩৩ থেকে ৩৫ ও ময়দার কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত এক থেকে দেড় মাস ধরেই বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। মাসখানেক আগে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লারে কেজি এখন ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ এবং দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের ডজন ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে, মসলা জাতীয় অন্যান্য পণ্যের দামেও। বাজারে প্রতি কেজি দেশি আদা ১০০ থেকে ১১০, আমদানি করা আদা ১৪০ থেকে ১৪৫, দেশি রসুন ৬০ থেকে ৭০ এবং ভারতীয় রসুন ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কিছু শীতকালীন সবজি এসেছে বাজারে। তবে সেগুলোর দাম চড়া। এক কেজি শিমের দাম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা এবং প্রতি পিস ফুলকপি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে টানা লকডাউনে কাজ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। বেশির ভাগ কর্মজীবীর আয় কমেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রায় সব মানুষেরই নাভিশ্বাস উঠেছে জীবন চালাতে। সংসার চালাতে না পেরে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছেন। তাই নিত্যপণ্যের লাগাম টেনে না ধরতে পারলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জীবন চরম সংকটে পড়বে বলে মনে করেন তারা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh