হোস্টেলজীবনেও থাকুন পরিচ্ছন্ন

সাফওয়ানা জাবীন

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২১, ০৯:৪১ এএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দেশে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ হোস্টেল আর হলে থেকে পড়াশোনা করেন। ২০২০ সালের মার্চের পর করোনার কারণে দেড় বছরের বেশি সময়ের সাধারণ ছুটি শেষে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আর হলগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেলে ফিরে নতুন করে খাপ খাওয়ানোর বিষয়টা কিঞ্চিৎ চ্যালেঞ্জের।

তবে হোস্টেলজীবন গুছিয়ে পরিপাটি রাখলে খাপ খাওয়াতে কষ্ট হবে না। আসলে নিজের ঘরে যেভাবে থাকেন, হোস্টেলেও সেভাবেই গুছিয়ে থাকলেই হয়। কীভাবে দীর্ঘ সময় পর হোস্টেলজীবনে ফিরে সেই আবহ ও টিপটপ রাখবেন, তার কিছু ধারণা দেওয়া হলো :

প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও নিজের কক্ষের সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আর জীবাণুমুক্ত করতে পারলে ভালো। এখানে ভাগাভাগি করে নিজের যেটুকু জায়গা থাকে, এর একটা বড় অংশজুড়ে থাকে বিছানা। আমরা যতক্ষণ হল বা হোস্টেলে থাকি, এর একটা বড় অংশ সময় কাটে বিছানায় শুয়ে বসে বই হাতে। এ ক্ষেত্রে বিছানার চাদর নির্বাচনে সচেতন হতে হবে। পছন্দের কোনো রঙের চাদর বিছাতে পারেন। তবে গাঢ় রঙের চাদর নির্বাচন করা ভালো। তাতে একটু ময়লা ধরলেও বিশেষ চোখে পড়বে না। আর উজ্জ্বল রঙ আপনার মন প্রফুল্ল রাখবে। ১৫ দিন পরপর চাদর ধুয়ে ফেলুন। একাধিক পরিষ্কার চাদর সংগ্রহে রাখুন। পর্দার রঙও প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ। পর্দার কাপড় এমন হওয়া উচিত, যাতে দিনের বেলায় টেনে নিয়ে দিব্যি রোদ আটকে খানিক ঘুমিয়ে নেওয়া যায়। 

হোস্টেলজীবনে রাত জেগে পড়াশোনা করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার অভ্যাস তো আমাদের অনেকেরই আছে। পড়ার টেবিলের ক্লথ নির্বাচনের ক্ষেত্রে হালকা রঙ বেছে নিন। হালকা রঙ মনে প্রশান্তি আনে। এতে পড়ায় মনোযোগ রাখা সহজ হয়। কটকটে রঙ হলে বারবার আপনার মনোযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। টেবিলে বইয়ের সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে একটি সিঙ্গেল বুকশেলফ ব্যবহার করতে পারেন। কক্ষের এককোণে শেলফটি রেখে অতিরিক্ত বইগুলো সাজিয়ে রাখুন। কক্ষের জায়গার সংকট হলে ওয়াল বুকশেলফ ব্যবহার করুন। তাতে পড়ার জায়গাটা ঘিঞ্জি দেখাবে না।

প্রতিদিন নানা কারণে বাইরে যেতে হয়। হোস্টেলে ফিরেই পরিহিত পোশাকটি সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে ফেলুন। একান্তই ধুয়ে ফেলা সম্ভব না হলে হালকা রোদ বা বাতাসে মেলে দিন। ময়লা কাপড় না জমিয়ে কেচে ফেলতে হবে। তাতে কোনো একদিন একবারে অনেকগুলো কাপড় কাচার চাপ পড়বে না। আর সঙ্গে সঙ্গে কেচে না ফেললে ময়লা কাপড়ে স্থায়ী হয়ে যাওয়ার, কাপড় ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ার, এমনকি কাপড় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাপড় রাখার জন্য সিঙ্গেল আলমারি (কাঠ, প্লাস্টিক, হার্ডবোর্ড) ব্যবহার করুন। কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিনের টুকরা রেখে দিন। ব্যবহৃত মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও ইয়ারফোনের যত্ন নিন। মুঠোফোন ও ল্যাপটপে চার্জ দেওয়া শেষ হয়ে গেলে চার্জার খুলে গুছিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন। সে ক্ষেত্রে টেবিলের ড্রয়ার বা কোনো শপিং ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।

হোস্টেলে যারা বসবাস করেন, তাদের অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘খাটের নিচে সংসার’। এই ‘খাটের নিচে সংসার’ বড় করা যাবে না। ‘মিনিমালিস্টিক অ্যাপ্রোচ’ বজায় রাখুন। অতিরিক্ত জিনিস রাখবেন না। যেটা একান্তই প্রয়োজন, না হলেই নয়, কেবল সেটাই কিনবেন। তাতে বাকি জীবনের পথচলাও সহজ হয়ে যাবে। পড়ার টেবিলে একটি রঙিন স্বচ্ছ আলপনা আঁকা বোতলে পছন্দমতো একটি গাছ রেখে দিতে পারেন। বারান্দা বা জানালায়ও ঝুলিয়ে দিতে পারেন কিছু গাছ।

অনেক ছোটখাটো প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন- কলম, পেনসিল, শার্পনার, ইরেজার, নেইল কাটার ইত্যাদি একটি কাঠের বা প্লাস্টিকের বক্সে রেখে টেবিলের এক কোণায় সাজিয়ে রাখুন। তাতে সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh