এমপিও ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রসঙ্গে

মোহাম্মদ মোকাররম হোসেন (আপন)

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৩২ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সবিনয়ে নিবেদন এই যে, আমরা এমপিওভুক্ত/নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা নানা রকমের বৈষম্যের শিকার। যার কারণে আমাদের সকলের জীবনযাপন অত্যন্ত দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ৯৭% অবদান রেখে চলেছি আমরা। একই পাঠ্যক্রম, একই সিলেবাসে পাঠদানসহ সরকারের সকল আদেশ- নিষেধ, বিধিবিধান পুঙ্খানুপুঙ্খ পালন করেও আমরা যে সকল বৈষম্যের শিকার তা সংক্ষেপে আপনার/আপনাদের সদয় অবগতির নিমিত্তে তুলে ধরছি।

আমরা সরকারি বেতনস্কেলের ১০০% পাই ২০০৯ সাল থেকে, তবে সেখান থেকে ১০% কর্তন করে রাখা হয় আমাদের অবসর ও কল্যাণট্রাস্ট বাবদ। যে অবসর ও কল্যাণট্রাস্টের টাকা তুলতে পোহাতে হয় নানা ঝামেলা। বেশিরভাগ শিক্ষক-কর্মচারি বেঁচে থাকতে অবসর ও কল্যাণট্রাস্টের টাকা দেখে যেতে পারেন না।আমরা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে পিয়ন পর্যন্ত সবারই বাড়ি ভাড়া একহাজার টাকা যা অন্য কোনো পেশার কর্মকর্তা- কর্মচারিদের নাই। আমরা হাজার হাজার শিক্ষক নিজের এলাকা থেকে ৪০০/৫০০ কিলোমিটার দূরে শিক্ষকতা করে এই সামান্য বাড়ি ভাড়া দিয়ে কিভাবে একটি বাসা ভাড়া করে পরিবার পরিজন নিয়ে চলবো? তাই এমতাবস্থায় আমাদের বাড়ি ভাড়া সরকারি নিয়মে চালু করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ করছি।

আমরা সকল শিক্ষকরা উৎসব ভাতা পাই মূল বেতনের ২৫% আর কর্মচারিরা পায় ৫০%। সেই হিসেবে একজন শিক্ষকের উৎসব ভাতা ৩১২৫ টাকা থেকে শুরু হয় এবং একজন অধ্যক্ষ সর্বোচ্চ ১২/১৩ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। বর্তমান বাজার মূল্যে একজন শিক্ষক এই সামান্য টাকায় কি করে পরিবার পরিজন নিয়ে উৎসব পালন করবেন? তাই সকলের জন্য শতভাগ উৎসব ভাতার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

আমাদের চিকিৎসা ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা, যা অন্যদের ১৫০০ টাকা। এছাড়া আমাদের সন্তাদের নাই কোনো শিক্ষা ভাতা, নাই কোনো পদন্নোতির ব্যবস্থা, নাই বদলি ব্যবস্থা। পদোন্নতি এবং বদলিব্যবস্থা চালু হলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান নানা সমস্যা দূর হবে এবং শিক্ষার মান- উন্নয়ন ও শিক্ষাক্ষেত্রে গতিশীলতা আসবে।

উপরে উল্লেখিত সকল বৈষম্য দূর করতে একটাই উপায় আছে বলে আমরা মনে করি। আর তা হলো সকল শিক্ষাব্যবস্থা একযোগে জাতীয়করণ করা।

শিক্ষাব্যবস্থা জাতীকরণ হলে শিক্ষক-কর্মচারিরা যেমন উপকৃত হবে তার চেয়েও বেশি উপকৃত হবে দেশের সকল শ্রেণির নিম্ন আয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ঝরে পড়া বন্ধ হবে ও দেশের সকলস্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিকভাবে সমতা আসবে এবং গ্রাম অঞ্চল শহরাঞ্চলে রুপান্তিত করার ভিশন পূর্ণ হবে।

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে একযোগে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ঘোষণা দিলে সরকারি কোষাগারের অতিরিক্ত অর্থও প্রয়োজন হবে না বললেই চলে।

অতএব, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী/শিক্ষামন্ত্রী সমীপে প্রার্থনা, দেশের ৯৭% শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠির অভিভাবক ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৮ কোটি জনতার মৌলিক অধিকার সকল শিক্ষাব্যবস্থা একযোগে জাতীয়করণ করে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আপনার/আপনাদের সদয় মর্জি প্রার্থনা করছি।

বিনীত,
সকল এমপিওভুক্ত/নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের পক্ষে,
মোহাম্মদ মোকাররম হোসেন (আপন)
সহকারী প্রধান শিক্ষক।
চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh