পূর্ণিমা ‘হত্যাকাণ্ডের’ সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২১, ০২:৪০ পিএম

সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলন

রাঙ্গামাটিতে কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমার রহস্যজনক মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্বজন ও সহপাঠীরা। 

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ১টায় রাঙ্গামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক প্রেস কনফারেন্স থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে। প্রেস কনফারেন্সে পূর্ণিমা চাকমার মামাতো ভাই পলাশ চাকমা পুরো ঘটনাকে পুঁজি করে ভিন্নখাতে প্রবাহিত না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

প্রেস কনফারেন্সে পলাশ চাকমা দাবি করেন, ‘আমার বোনের মৃত্যুটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এক বা একাধিক ব্যক্তি মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ঘটনার পর আমরা ১ নভেম্বর থানায় এজাহার দায়ের করলেও পুলিশ এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। এছাড়া ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে জানতে সিভিল সার্জন অফিসে গেলে তারা থানায় যেতে বলেন; আবার থানা সিভিল সার্জন অফিসে যেতে বলেন। তাই আমরা দ্রুত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রদান এবং তদন্তপূর্বক মামলা গ্রহণ করে আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।’ 

প্রেস কনফারেন্সে পলাশ চাকমার সাথে কলেজ শিক্ষার্থী মোহিনী চাকমা, মিথিলা চাকমা, রুবেল চাকমাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

পলাশ পূর্ণিমা ‘হত্যাকাণ্ডের’ ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ‘২৯ অক্টোবর রাঙ্গামাটি রাজবাড়ী এলাকার মল্লিকা দেওয়ানের বাসায় আমার বোন পূর্ণিমা চাকমার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তারা পূর্ণিমা ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে দামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। বলা হচ্ছে পূর্ণিমা সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন সে যদি সিলিং ফ্যানের মাধ্যমে আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে কিভাবে ওড়না বেঁধে নিলো? ওই রুমে তো কোন চেয়ার-টেবিল ছিলো। আর সিলিং ফ্যানের যে উচ্চতা কোনকিছুর ব্যবহার ছাড়া ওড়না লাগানো সম্ভব না। আবার এ ঘটনার পর বাড়ির মালিক আমাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে টাকা দিতে চাইবে কেন? আমরা তো টাকা দিয়ে দফারফা করতে চাই না। টাকা দিয়ে তো বোনকে ফিরে পাবো না। আমরা বোন হত্যার বিচার চাই।’

এদিকে, রাঙ্গামাাটির পুলিশ সুপার (এসপি) মীর মোদ্দাছছের হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পূর্ণিমা চাকমার মৃত্যুর ঘটনায় ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা হয়েছে। তারা বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখছেন। তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।’

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কলেজছাত্রী পূর্ণিমাকে অচেতন অবস্থায় রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা শুনে উধাও হয়ে যান হাসপাতালে নিয়ে মল্লিকা দেওয়ারসহ অন্যরা। ঘটনার পরদিন দুপুরে পূর্ণিমা চাকমার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা জেলার জুরাছড়ি উপজেলার ৪ নম্বর দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বগাখালী এলাকার সাধন চাকমার মেয়ে। সে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পড়ালেখার সুবাধে জেলা শহরের রাজবাড়ী এলাকার মল্লিকা দেওয়ানের বাসায় থাকতো। পূর্ণিমাকে মল্লিকা দেওয়ানের বাসায় রাখার ব্যবস্থা করেন দেন জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা অঞ্জলী চাকমা (গান্ডী)।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh