সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে

স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিস্টেম কতটুকু কার্যকর?

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২১, ০২:৪৫ পিএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

যানজটের কারণে বিশ্বে অচল শীর্ষ ১০টি নগরীর মধ্যে রাজধানী ঢাকা অনেক আগেই স্থান করে নিয়েছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে আধুনিক ও সময়োপযোগী ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার বিকল্প নেই; কিন্তু দুই দশকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পর এখনো ঢাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে পুলিশের হাতের ইশারায়।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রায় ৫২ কোটি টাকা খরচ করে ঢাকার চারটি ইন্টারসেকশনে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিস্টেম বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। এ জন্য জাপান থেকে আইটিএস সফটওয়্যার সংবলিত দুটি বিশেষ কম্পিউটার নিয়ে আসা হয়; কিন্তু স্থাপনের আগেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) একটি গোডাউন থেকে বিস্ময়করভাবে চুরি হয়ে গেছে সেগুলো। গত বছর চুরি হওয়া পৌনে তিন কোটি টাকা দামের এই সার্ভার কম্পিউটার ও বিশেষায়িত সফটওয়্যারের হদিস এখনো মেলেনি। ফলে অলস পড়ে আছে আইটিএস প্রকল্পের সরঞ্জামাদি। 

ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিগন্যাল, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর একটি আইটিএস, যেখানে ইন্টারসেকশনের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রিত হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০০০ সালে ঢাকা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ৭০টি মোড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত বাতি স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে ২০০৮ সালে শেষ হয়েছিল। তবে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই অধিকাংশ বাতি অকেজো হয়ে পড়ে।

এরপর ২০১০-১১ অর্থবছরে সিটি করপোরেশন আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল, যার আওতায় প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত সরঞ্জাম কেনা হয়েছিল; কিন্তু ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১০টি সিগন্যাল পয়েন্টের মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র একটি। 

স্বভাবতই দায়িত্বশীলদের উদাসীনতার কারণে চারটি মোড়ে আইটিএস স্থাপন প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছয় বছর ধরেও যা স্থাপন করা যায়নি। তাছাড়া রাজধানীর প্রায় ৭০টি ব্যস্ত মোড়ের মধ্যে মাত্র চারটিতে আইটিএস স্থাপন করে যানজট নিরসন কতটা সম্ভব, সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ প্রকল্প গ্রহণের আগে যে ধরনের সমীক্ষার প্রয়োজন আইটিএসের ক্ষেত্রে তা হয়নি।

তারপরও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আইটিএস বাস্তবায়নের চেষ্টা করা যেতে পারে; কিন্তু প্রকল্পটির অগ্রগতি এখন পর্যন্ত অত্যন্ত হতাশাজনক। তাই নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh