রসুন্দি বা লতা-পারুল

মোকারম হোসেন

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১০:৩৯ এএম

ছবি: মোকারম হোসেন

ছবি: মোকারম হোসেন

প্রস্ফুটন প্রাচুর্য এবং রাজসিক ঐশ্বর্যের কারণে রসুন্দি ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় সর্বত্র। তবে আমাদের দেশে অভিষেক বেশি দিনের নয়। নাম রসুন্দি বা লতা-পারুল হলেও, এ অঞ্চলের প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পারুলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

সম্ভবত গড়নের দিক থেকে কিছুটা সাদৃশ্য থাকায় এমন নামকরণ। প্রায় কাছাকাছি রঙের আরেকটি ফুলের নাম ঢোলকলমি। ঢাকায় রমনা পার্ক, বলধা গার্ডেন, শিশু একাডেমি ও বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ অনেকের ব্যক্তিগত সংগ্রহেও দেখা যায়। কেউ কেউ শখ করে বাড়ির সীমানা প্রাচীরে লাগিয়ে রাখেন। বিশেষত ঢাকার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকার মধ্যে- উত্তরা, বনানী ও ধানমন্ডি এলাকায় সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। 

আমাদের মৌসুমি ফুলের বাগান প্রস্তুত করে নেবার কাজ যখন শুরু হয়, তখন নীল-পারুলও নিজেকে নতুনভাবে সাজিয়ে নিতে শুরু করে। প্রায় নিষ্প্রাণ গাছে নতুন করে সঞ্চারিত হয় প্রাণ। কাঁচা সবুজ পাতায় ভরে ওঠে গাছ। হেমন্তের প্রায় পুষ্পহীন প্রকৃতিতে ওরাই যেন একমাত্র সম্রাজ্ঞী। পাতা থেকে রসুনের গন্ধ পাওয়া যায় বলে এদের (Pseudocalymma allaceum) ইংরেজি নাম গার্লিক ভাইন। কেউ কেউ আবার নীল-পারুল নামেও ডাকেন।

গাছ লতান, চিরসবুজ, শক্ত, দীর্ঘ ও ঝোপাল। যৌগপত্র ২ বা ৩ পক্ষল, পাতা- ভল্লাকার বা আয়তাকার, মসৃণ, ৪ থেকে ৫ সেন্টিমিটার লম্বা, চার্ম। শীর্ষ পাতাটিই মূলত আকাশিতে রূপান্তরিত হয়। হেমন্ত ছাড়াও বছরে আরও দু’একবার ফুল ফোটে। ফুলের অগ্রভাগ ঈষৎ বেগুনি, নলাকার অংশটি ক্রিম সাদা। দল ফ্যানেলের মতো, মুখ ৪ সেন্টিমিটার চওড়া, তাতে ৫টি মুক্ত পাপড়ি আছে, সেগুলো গোলাকার ও ছড়ান। বংশবৃদ্ধি কলম ও শিকড় থেকে গজান চারায়। এরা ক্রান্তীয় আমেরিকার প্রজাতি।

লেখক : মোকারম হোসেন, নিঃসর্গবিদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh