উত্তরাধিকার সম্পত্তি গ্রাস বা ঠকানো ব্যক্তির পরিণতি কী?

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১২:২৮ পিএম | আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০১:১৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ব্যয়-বণ্টনে সীমা লঙ্ঘনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উত্তরাধিকার সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন না করা। বিশেষকরে পিতার মৃত্যুর পর বোনদের কোনো অংশ না দেওয়া। সমুদয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিজেরা ভোগ করা।

এ বিষয়ে কুরআন সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে যে, ‘মাতা-পিতা ও নিকটাত্মীয়দের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদের অংশ আছে এবং মাতা-পিতা ও নিকটাত্মীয়দের সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছে, কম হোক বা বেশি হোক। এ অংশ সুনির্ধারিত।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৭)

এভাবে সুরা নিসার বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা উত্তরাধিকার সম্পদের বিধি-বিধান সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। মূলত মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদের সঙ্গে চারটি হক জড়িত। ১. তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করা। ২.  তার ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করা। ৩. অসিয়ত থাকলে তা পূরণ করা। ৪.উত্তরাধিকারদের মধ্যে শরিয়ত নির্ধারিত পন্থায় অবশিষ্ট সম্পদ বণ্টন করে দেওয়া। 

এগুলো লঙ্ঘন করা কোরআনি বিধান লঙ্ঘন করার শামিল। যার পরিণতি অত্যন্ত ভায়াবহ। আল্লাহ বলেন, ‘এগুলো হলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী সমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটাই হলো মহা সফলতা। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের অবাধ্যতা করবে এবং তার সীমা লঙ্ঘন করবে, তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরদিন থাকবে। আর তার জন্য আছে অপমানজনক শাস্তি।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৩-১৪)

তাছাড়া উত্তরাধিকার সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন না করে আত্মসাৎকরা হলে এতে ‘হাক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক নষ্ট করা হয়। যা কখনো আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। দুনিয়াতে এর কোনো বিহিত না করলে আখিরাতে নেকি দিয়ে তা পরিশোধ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের সম্পদ ভক্ষণ কোরো না এবং অন্যের সম্পদ গর্হিত পন্থায় গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তোমরা জেনেশুনে তা বিচারকদের কাছে পেশ কোরো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৮)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কি জানো নিঃস্ব কে? সবাই বলল, আমাদের মধ্যে নিঃস্ব সেই ব্যক্তি যার কোনো টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদ নেই। তখন তিনি বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে নিঃস্ব সেই ব্যক্তি, যে দুনিয়া থেকে সালাত-সিয়াম-জাকাত ইত্যাদি আদায় করে আসবে। সঙ্গে ওই সব লোকেরাও আসবে, যাদের কাউকে সে গালি দিয়েছে, কারো ওপর অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ গ্রাস করেছে, কাউকে হত্যা করেছে বা কাউকে প্রহার করেছে। তখন ওই সব পাওনাদারকে ওই ব্যক্তির নেকি থেকে পরিশোধ করা হবে। এভাবে পরিশোধ করতে করতে যদি তার নেকি শেষ হয়ে যায়, তখন ওই সব লোকদের পাপসমূহ এই ব্যক্তির ওপর চাপানো হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৮১)

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh