ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৫২ পিএম
শীত শুরু হতেই ইউরোপে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ছবি : রয়টার্স
শীত শুরু হতেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। অথচ সব দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে ঐকমত্য এখনও আসেনি। তারপরও বিভিন্ন দেশে মহামারি প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এখনও চলছে ভ্যাকসিনবিরোধী সমাবেশ। তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর হচ্ছে কোনও কোনও দেশ। একইসঙ্গে টিকা কর্মসূচিও জোরদার করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপে সাতদিনে প্রতি এক লাখে নতুন করে ২৩০ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। বিশ্বে এটি সর্বোচ্চ। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে রাশিয়ায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে মহামারির মূল কেন্দ্র এখন ইউরোপ। শীতের শুরুতে করোনা মোকাবেলায় নানা বিধিনিষেধে শিথিলতা ও টিকা প্রদানে অপর্যাপ্ততার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে।
জার্মান রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা রবার্ট কোচ ইন্সস্টিটিউট গতকাল শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বলেছে, দেশটিতে একদিনে ৫২ হাজার ৯৭০ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ও মারা গেছে ২০১ জন।
অষ্ট্রিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, দেশটিতে একদিনে ১৫ হাজার ৮০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে যা মহামারি শুরুর পর সর্বোচ্চ। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামী সোমবার থেকে দেশটি পুরোপুরি লকডাউন শুরু করতে যাচ্ছে। এর আগে দেশটিতে যারা করোনার টিকা নেননি, তাদের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেছেন, দেশটিতে পূর্ণ লকডাউন ২০ দিন চালু থাকবে। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকা নিতে আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে।
এছাড়া সম্প্রতি ব্রিটেন, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হেগার সোমবার থেকে টিকা না নেওয়া লোকজনের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। চেক প্রজাতন্ত্রও বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করেছে।
জার্মানির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ শুক্রবার সংক্রমণ সুরক্ষা আইনের সংশোধন অনুমোদন করেছে। মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই এ আইন সংশোধন করা হয়েছে।
এদিকে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ায় নেদারল্যান্ডসে তিন সপ্তাহের লকডাউন ও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ডাচ সরকার। একই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে ভ্যাকসিন পাস নিয়ে চলাফেরা বাধ্যতামূলক ও নববর্ষের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে মানুষ।
শুক্রবার রোটেরডাম শহরে কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এ মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে তা সহিংস রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালায়। এসময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে ডাচ পুলিশ। এতে অন্তত দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া বিক্ষোভ দমাতে জলকামান ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া ইতালি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, সুইডেন, ক্রোয়েশিয়া এবং স্লোভেনিয়ায় লোকজনকে টিকা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। - এএফপি, রয়টার্স