মহাকালের বিস্তৃতে আমরা হলাম ক্ষণিকের আভাস

আসিফ

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২১, ০২:৩০ পিএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ০৮:১০ পিএম

আসিফ

আসিফ

খ্রিস্টপূর্ব ৩ শতাব্দি থেকে আরম্ভ করে ৬শত বছর ব্যাপি মানবজাতি একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চারপাশের জগতের দিকে তাকিয়েছিল। এর থেকে জন্ম নিয়েছিল বুদ্ধিবৃত্তিক দুঃসাহসিক অভিযানের, যা আমাদের নিয়ে গিয়েছিল মহাশূন্যের বেলাভূমিতে। এগুলো ঘটেছিল আলেক্সান্দ্রিয়াতে।

মর্মর পাথরে নির্মিত ওই গৌরবময় শহরের দৃশ্য ও আনুসঙ্গিক ধারণার কিছুই অবশিষ্ট নেই আজ। নিষ্পেষণ ও জ্ঞান অর্জনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রাচীন আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রায় সমস্ত স্মৃতি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এর অধিবাসীরা ছিল ভীষণভাবে বৈচিত্রপূর্ণ। মেসেডোনীয় এবং পরে রোমান সৈনিক, মিসরীয় পুরোহিত, গ্রিক অভিজাত, ফিনিশীয় নাবিক, ইহুদি বণিক, ভারত এবং অব-সাহারা আফ্রিকা হতে আগত পর্যটকদের এক মিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। নগরীর বিশাল জনসংখ্যার ক্রীতদাস ছাড়া, প্রত্যেকে আলেক্সান্দ্রিয়ার গৌরবময় মহান অধ্যায়ের বেশিরভাগ সময়ে মিলেমিশে, শান্তি, সৌহার্দ্য ও পারস্‌পরিক শ্রদ্ধাবোধ রেখে বসবাস করতো।

নগরীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মহাবীর আলেক্সজান্ডার। এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছিলেন তারই প্রাক্তন দেহরক্ষী। আলেক্সজান্ডার বহিরাগত সংস্কৃতিগুলো প্রতি শ্রদ্ধাবোধ পোষণ করতেন। তিনি মুক্তমনে জ্ঞানলাভের চেষ্টাকে উৎসাহিত করেছিলেন। ঘটনাটি সত্যিই ঘটেছিল কিনা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, প্রচলিত প্রথানুসারে তিনি পৃথিবীর প্রথম ফরারহম নবষষ-এর মাধ্যমে লোহিত সাগরের তলদেশে নেমেছিলেন। তিনি তার জেনারেল ও সৈনিকদের পারস্য এবং ভারতীয় মেয়েদের বিয়ে করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। তিনি শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন অন্যান্য জাতির দেবতাদের। তিনি তার শিক্ষক অ্যারিস্টোটলের জন্য হাতিসহ নানা বৈচিত্রময় প্রাণিসমূহ সংগ্রহ করেছিলেন। বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও জ্ঞানের বিশ্ব কেন্দ্রভূমিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে তার শহর নির্মাণ করা হয়েছিল বিশাল আয়োজন ও প্রচুর পরিমাণে ব্যয় করে। এই শহরের শোভা বৃদ্ধি করেছিল ৩০ মিটার চাওড়া প্রশস্ত রাজপথ, চমৎকার দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশিল্প এবং ভাস্কর্যশিল্প, আলেক্সান্ডারের সমাধি মন্দির এবং একটি বিশাল বাতিঘর, ফারোস - যা হলো প্রাচীনকালের সপ্তাশ্চার্যের একটি।

কিন্তু আলেক্সান্দ্রিয়াতে সবচেয়ে অসাধারণ যা ছিল তাহলো গ্রন্থগারটি এবং এর সংলগ্ন সংগ্রহশালা বা মিউজিয়াম (আক্ষরিকভাবে, এটা ছিল একান্তভাবে নিয়োজিত মানবতাবাদের পৃষ্ঠপোষক ৯ জন জ্ঞান দেবীর (Nine Muses) বৈশিষ্ট্যভিত্তিক)। কিংবদন্তীর ওই গ্রন্থাগারের এখনো পর্যন্ত টিকে আছে তাহলো সেরাপিয়ামের একটি স্যাঁতস্যাঁতে ভিজা ও বিস্মৃত ভূগর্ভস্থ ঘর। গ্রন্থাগার ভবনটি কোনো এক সময় ছিল একটি মন্দির এবং পরবর্তীতে জ্ঞানচর্চার জন্য পুনঃউৎসর্গকৃত হয়েছিল। শুধুমাত্র গুটিকয়েক ধ্বংসপ্রাপ্ত তাক সম্ভবত এর বস্তুগত অবশেষমাত্র। তথাপি এই স্থান ছিল এক সময় এই গ্রহের সবচেয়ে বড় শহরের মস্তিষ্ক ও গৌরব। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম সত্যিকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান। গ্রন্থাগারের স্কলাররা বা পণ্ডিতরা গবেষণা ও চর্চা করতেন মহাবিশ্বের সকল বিষয় নিয়ে। Cosmos হল গ্রীক শব্দ যার অর্থ হল শৃংখলাপূর্ণ মহাবিশ্ব। একভাবে এই শব্দটি Chaos-এর বিপরীত অর্থের। এই শব্দটা সমস্ত বিষয়ের মধ্যে গভীর আন্তঃসংযোগ থাকার কথা বলে। এই শব্দের ভিতর দিয়ে এই বিশ্ব এক সংহত রূপ প্রদর্শন করে। এখানে যে পণ্ডিত সমাজ ছিল তারা পদার্থবিজ্ঞান, সাহিত্য, চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোর্তিবিদ্যা, ভূগোলবিদ্যা, দর্শনশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, জীববিজ্ঞান, এবং প্রকৌশলবিদ্যায় পর্যবেক্ষণ ও গবেষণারত ছিলেন। বিজ্ঞানচর্চা ও পাণ্ডিত্য পরিপূর্ণতা পেয়েছিল। আলেক্সান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারটি হল এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষেরা প্রথম গুরুত্বসহকারে এবং পদ্ধতিগতভাবে বিশ্ব সম্‌পর্কে জ্ঞান আহরণ ও সঞ্চিত করেছিল।

ইরাটোস্থেনিসের সাথে আরো বলা যায় জ্যোতির্বিদ হিপারকাসের নাম, যিনি নক্ষত্রপুঞ্জের অবস্থানের মানচিত্র তৈরি করেছিলেন এবং নক্ষত্রের ঔজ্জ্বলতার পরিমাপ করেছিলেন; ইউক্লিড অসাধারণভাবে জ্যামিতিকে নিয়মাবদ্ধ করেছিলেন এবং রাজাকে বলেছিলেন, একটি দূরুহ গাণিতিক সমস্যাকে নিয়ে সংগ্রাম করা ছাড়া, “জ্যামিতি শেখার কোনো রাজকীয় পথ নেই“; থ্রেশের ডায়োনিসিয়াস(Dionysius) এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি parts of speech-কে সংজ্ঞায়িত করেছেন এবং তিনি ভাষাকে পুঙ্খানুরূপে বিশ্লেষণ করেছেন, যেমনটি ইউক্লিড জ্যামিতির ক্ষেত্রে করেছিলেন; হেরোফেলাস নামক শরীরতত্ত্ববিদ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হৃদয় নয় মস্তিষ্কই প্রজ্ঞার আঁধার; আলেক্সান্দ্রিয়ার হেরোন ছিলেন গিয়ার ট্রেইন ও বাষ্পীয় ইঞ্জিনের উদ্ভাবক এবং অটোমাটা গ্রন্থের লেখক, যা রোবট সম্‌পর্কে পৃথিবীর প্রথম বই; Perga-এর এপলোনিয়াসের, এমন একজন গণিতবিদ ছিলেন যিনি কনিক সেকশনের কাঠামোগুলোকে ব্যাখ্যা বা প্রদর্শন করেছিলেন- উপবৃত্ত, পরাবৃত্ত, এবং অধিবৃত্ত হিসেবে। এই নামে ডাকা হয় কারণ একটি শঙ্কুকে ফালি করার মাধ্যমে এই বক্ররেখাগুলোকে তৈরি করা যেতে পারে বিভিন্ন কোণে। ১৮শ’ বছর পরে গ্রহগুলোর গতিবিধির বোঝার জন্য প্রথম কণিক সেকশনের উপর এপলোনিয়াসের রচনা বা চিন্তাভাবনা ব্যবহার করা হয়েছিল জোহান কেপলারের মাধ্যমে।

বর্তমানে আমরা জানি যে গ্রহ, ধূমকেতু, নক্ষত্রেরা এই পথ ধরে ছুটে চলে। অন্তত লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আগ পর্যন্ত আর্কিমিডিস ছিলেন সবচেয়ে বড় যন্ত্রকৌশলবিদ। জ্যোতির্বিদ ও ভূগোলবিদ টলেমি, বর্তমানে জ্যোতিষশাস্ত্রের (pseudoscience of astrology) মতো অপবিজ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত অনেক কিছুই তিনি সংকলন করেছিলেন। তার ভূ-কেন্দ্রিক বিশ্ব মতবাদ ১৫০০বছর ধরে প্রভাব বিস্তার করে রাখে, এটা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা মারাত্নক ভুল হওয়ার বিরুদ্ধে কোনো নিশ্চয়তা দেয় না। এই সমস্ত মহান লোকদের মধ্যে ছিলেন এক মহান নারী হাইপেশিয়া, যিনি এই গ্রন্থাগারের গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ এবং শেষ প্রাণপ্রদীপ ছিলেন। গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার ৭শ’ বছর পর এর ধ্বংসের সাথে হাইপেশিয়ার মহান মৃত্যু জড়িয়ে আছে’- সে কাহিনী আমরা কোনো এক সময় বলবো।

মিসরের গ্রীক রাজারা যারা আলেক্সান্দারের উত্তরাধিকার হয়েছিলেন তারা শিক্ষার ব্যাপারে প্রচণ্ড উৎসাহী ছিলেন। শত শত বছর ধরে, গবেষণাকর্মকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিলেন এবং সে যুগের সবচেয়ে বড় মনীষীদের কাজকর্মের জন্য গ্রন্থাগারে পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রেখেছিলেন। এই গ্রন্থাগারের ছিল ১০টি বিরাট বিরাট গবেষণা কক্ষ, প্রতিটা কক্ষ নির্ধারিত ছিল একেকটি পৃথক বিষয়ের উপর গবেষণার জন্য; আরো ছিল রঙ্গমঞ্চ ও ফোয়ারা; উদ্যান; একটি চিড়িয়াখানা; শবব্যবচ্ছেদ কক্ষ; একটি মানমন্দির; এবং একটি বিশাল ভোজনকক্ষ যেখানে অবকাশে অনুষ্ঠিত হত সূক্ষ্ম ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাসমূহ। 

গ্রন্থাগারটির প্রাণকেন্দ্র ছিল এর সংগৃহীত পুস্তকরাশি। এর উদ্যোক্তরা সারা পৃথিবীর সংস্কৃতি ও ভাষা চষে বেড়িয়েছিলেন সংগ্রহের আকাংখা পূরণে। তাদের প্রেরিত লোক দেশ-বিদেশ যেত বই কেনার উদ্দেশ্যে। আলেক্সান্দ্রিয়ার পোতাশ্রয়ে নোঙর করা প্রতিটি বাণিজ্যিক জাহাজ নিরাপত্তারক্ষীরা তল্লাসি করতো- চোরাচালানকৃত দ্রব্যের জন্য নয় বরং পুস্তকের সন্ধানে। ধার করে ভুর্জপত্রে লেখা পান্ডুলিপি (scroll) আনা হত। তারপর হাতে লিখে অনুলিপি করে পরে মালিককে ফেরত দেওয়া হত। এইসব হাতে লেখা পেপিরাসের স্ক্রলের পুস্তকের সংখ্যা কত তা অনুমান করা দুঃসাধ্য। তবু মনে করা হয় সম্ভবত পুস্তকের সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ। কি ঘটেছিল ওই সমস্ত বইয়ের ভাগ্যে? এটা ঠিক যে ধ্রুপদী সভ্যতায়(classical civilization) এমন কিছু ঘটনার সৃষ্টি হয়েছিল যা তাদের নিজেদেরকে নানাভাগে দ্বিধাবিভক্ত করে ফেলে।

ফলশ্র“তিতে গ্রন্থাগার আপনা থেকেই ধ্বংস হয়ে যায়। গুটিকয়েক রচনাশৈলীর বিচ্ছিন্ন টুকরোসহ কর্মকাণ্ডের খুবই অল্প অংশ টিকেছিল। কী প্রচণ্ড কৌতূহলপূর্ণ কিন্তু নাগালের বাইরে ওই অংশ (বিট) এবং টুকরোগুলো! আমরা জানি, উদাহরণস্বরূপ, যে গ্রন্থাগারের সেলফগুলোতে স্যামসের জ্যোতির্বিদ অ্যারিস্টোকার্সের লেখা একটি বই ছিল। সে যুক্তি প্রমাণ দ্বারা বলেছিল, পৃথিবী হল গ্রহগুলোর একটি, যা অন্যান্যগুলোর মতোই সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে, এবং নক্ষত্রগুলো বিশাল দূরত্বে অবস্থিত। এই সিদ্ধান্তগুলোর প্রত্যেকটি সম্পূর্ণভাবে সঠিক কিন্তু তারপরও আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল প্রায় দুহাজার বছর এইগুলো পুনরাবিস্কারে। যদি আমরা অ্যারিস্টেকার্সের এই কাজ সংক্রান্ত রচনা হারানোর মতো আরো লক্ষাধিক ক্ষতিকে হিসেব করি তাহলে আমরা মর্ম উপলব্ধি করতে পারবো ধ্রুপদী সভ্যতার কীর্তির বিশালতা এবং এর ধ্বংসের ভয়াবহতাকে।

প্রাচীন পৃথিবীর জানা জ্ঞান-বিজ্ঞানকে অতিক্রম করে আমরা অনেক দূর চলে এসেছি। কিন্তু তারপরও অতীত ইতিহাস সম্‌পর্কে আমাদের জ্ঞানের অপূরণীয় ফাঁক থেকে গেছে। অনুমান করি আমাদের অতীত সম্‌পর্কে প্রচণ্ড রহস্যের ধুম্রজাল দূর করতে পারতাম আলেক্সান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের একটি সদস্য কার্ডের বিনিময়ে। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে, এই গ্রন্থাগারে ব্যাবিলনের এক যাজক বেরোসাসের লিখিত তিন খণ্ডে সমাপ্ত প্রাচীন পৃথিবীর ইতিহাস ছিল যা বর্তমানে আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। এর প্রথমখণ্ডে সৃষ্টি পর্ব থেকে নূহের প্লাবন পর্যন্ত সময়কালকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে যে, সময়কে তিনি ৪ লক্ষ ৩২হাজার বছর বলেছেন অথবা ওল্ড টেষ্টামেন্টে উল্লেখিত সময়পঞ্জি চেয়ে তা শতগুণ বেশি। 

কার্ল সাগান বলেছেন, ”আমরা অবাক হই শিহরিত হই ভেবে যে এর মধ্যে কি লেখা ছিল। 

প্রাচীন মানবেরা জানতেন যে, পৃথিবী হল খুবই পুরাতন। তারা দূরবর্তী অতীতের মধ্যদিয়ে গভীরভাবে অনুসন্ধান করে তা খোজার চেষ্টা করেছেন। আমরা এখন জানি যে তারা এ-পর্যন্ত যা চিন্তা করেছেন তার চেয়েও অনেক বেশি পুরাতন হল শৃংখলাপূর্র্ণ মহাবিশ্ব বা কসমস। আমরা মহাশুন্যে বিশ্বকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি এবং দেখেছি যে আমরা বসবাস করছি ধুলির একটি কণায় যা একটি অন্ধকারময় গ্যালাক্সির দূরবর্তী কোণে অবস্থিত এবং সাধারণ একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলছে। যদি এই অপরিমেয় মহাশূন্যে আমাদের অবস্থান একটি কণার মতো হয়, তাহলে যুগের বিস্তৃতিতে আমরা হই ক্ষণিকের আভাসমাত্র। আমরা এখন জানি যে আমাদের বিশ্ব- অথবা অন্তত এর একেবারে ইদানীংকার আবির্ভাব হল প্রায় ১৩ শত কোটি থেকে ১৮শত কোটি বছরের পুরাতন। এটা ছিল অদ্যাবধি ঘটা একটি উল্লেখযোগ্য বিস্ফোরণের ঘটনা যাকে মহাবিস্ফোরণ বলা হয়। বিশ্বের শুরুতে শুধুমাত্র মহাশূন্যের সমস্ত অংশজুড়ে একটি সমভাবে বিকিরিত অগ্নিগোলক ছাড়া, গ্যালাক্সি, নক্ষত্র অথবা গ্রহ, কোনো প্রাণ অথবা কোনো সভ্যতা ছিল না।

মহাবিস্ফোরণ থেকে কসমস পর্যন্ত করিডোরটি যা আমরা জানতে আরম্ভ করেছি তাহলো বস্তু এবং শক্তির সবচেয়ে বিষ্ময়কর রূপান্তর। তবে যে পর্যন্ত না আমরা আর কোনো জায়গায় বুদ্ধিমান প্রাণি দেখতে পাই, ততক্ষণ আমরাই হব আমাদের সমস্ত রূপান্তরের সবচেয়ে সুন্দর- মহাবিস্ফোরণের সুদুর উত্তরাধিকার। আমরা নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছি মহাবিশ্বকে বোঝার এবং সেইসাথে আবার তার রূপান্তর নিয়ে চিন্তা করার জন্য যেখান হতে আমাদের উদ্ভব ঘটেছে।

লেখক : বিজ্ঞান বক্তা ও লেখক।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh