সাপের ভয়ে ধানকাটা বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২১, ০৮:১৩ পিএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১, ০৮:১৪ পিএম

গোখরা সাপ

গোখরা সাপ

গোখরা সাপ আতঙ্কে ঘুম হারাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের এক বাড়ির অর্ধশত সদস্যের। আর আতঙ্কে গোটা উপজেলা সদরের হাজার পাঁচেক মানুষ। এমনকি সাপের ভয়ে বন্ধ রয়েছে জমির ধানকাটাও। এই অবস্থা চলছে গত ১৫ দিন ধরে। রাস্তায় বের হলেই মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাপের। এতে মানুষের চলাচলে চরম ভয় ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। 

উপজেলা সদরের চারদিকে কার্বলিক এসিড ছিটানো হয়েছে। টানানো হয়েছে লাল পতাকা। সাপ ধরার জন্যে উপযুক্ত লোক খোঁজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয়দের সর্তকতার সাথে চলাফেরা করারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নাসিরনগর সদরের দত্তবাড়ির দালান ভাঙ্গার ইটের স্তূপে সন্ধান পাওয়া যায় সাপের বাসার। 

ওই বাড়ির এক সদস্য প্রতীক দত্ত জানান, তাদের বাড়ির সীমানায় জোড় পুকুরের মধ্যবর্তী রাস্তায় পুরনো ভাঙ্গা ইট স্তূপাকারে রাখা হয়েছে। সেখানেই সাপের আস্তানা। তাদের একটি দালান ভাঙ্গার পর ভাঙ্গাচুরা ইটগুলো পুরাতন বাড়ি লাগোয়া পুকুর পাড়ে মজুদ করে রাখা হয়। গত ৬ নভেম্বর সকালে এক রাখাল গরু নিয়ে পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় ইটের ওপর দুটি সাপ দেখে। এই সাপ দুটি মেরে ফেলে সে। এরপর আরো অনেকে সাপ দেখতে পান। এখন সেই সাপ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বাড়ি থেকে কয়েক’শ মিটার দূরে, এমনকি অনেক দূরের ধান ক্ষেতের মাঝখানে সাপ দেখা যাচ্ছে। 


বিষয়টি প্রথমে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। এরপর প্রাণী সম্পদ অফিসকে জানালে তাদের লোকবলের অভাব, এই কাজ করার সুযোগ নেই বলে সটকে পড়ে। বন বিভাগের লোকজনকে ডাকা হলে তারাও পরিদর্শন করে একই কথা বলে। এরপর স্বেচ্ছায় সাপ ধরার একটি সংগঠনের সাথে তাদের এবং প্রশাসনের যোগাযোগ হয়। স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ নামের ওই প্রতিষ্ঠানের দুই সদস্য শাহজাহান ও হিমু রবিবার নাসিরনগর আসেন। তাদের বাড়ি বগুড়া ও রংপুরে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন জানান, তিনি বিষয়টি জানার পর ফরেস্টের মাধ্যমে হবিগঞ্জের বন্য প্রাণী সংরক্ষণের অফিসের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের টিম আসে। তারা জানায় সাপগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তবে তারা সেগুলো ধরতে পারবে না। ধরিয়ে দিলে সংরক্ষণ করতে পারবে। এরপর আমরা স্থানীয় সাপুড়েদের সাথে কথা বলি। আসলে এই পেশাটা এখন বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর কেউ সাপ ধরার পথে নেই। তারপর আমরা দক্ষ সাপুড়ের সন্ধান করতে শুরু করি। প্রাথমিকভাবে কার্বলিক এসিড দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় এবং সাপগুলো যাতে ছড়িয়ে যেতে না পারে সেজন্যে কারেন্ট জাল দিয়ে জায়গাটিতে বেষ্টনী দেয়া হয়েছে। সতর্ককরনী হিসেবে সাধারণ মানুষকে ওইদিক দিয়ে চলাচল না করতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সাপ নিধনের কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় দূর হয়নি আতঙ্ক। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh