আদালতে মুখোমুখি মামুনুল-ঝর্ণা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০৫:৫৫ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হাসান শ্যামলের আদালতে আসামি মামুনুল হকের উপস্থিতিতে তিনি জবানবন্দি দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি রাকিবুদ্দিন বলেন, ‘ঝর্ণার প্রথম স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মাওলানা মামুনুল হক। স্বামীর বন্ধু হওয়ার সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তাদের সুখের সংসার ছিল। ওই সংসারে তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু মাঝে মাঝে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য বা ঝগড়াঝাটি হলে তার স্বামী-স্ত্রী দুজনই মামুনুল হকের শরণাপন্ন হতেন। তিনি তাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে মিলমিশ করে দিতেন। এতে করে তিনি (মামুনুল হক) ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।

এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মামুনুল হক তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই ফোন দিয়ে খোশগল্প করতেন। একপর্যায়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি নিয়ে দূরত্ব তৈরি হলে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরে মামুনুল হকের পরামর্শেই তিনি খুলনা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। মামুনুল হকই ঢাকায় তার থাকার ব্যবস্থা করেন। এ সময় মামুনুল হক বিয়ের আশ্বাসে দেখিয়ে বেড়ানোর কথা বলে বিভিন্ন জায়গার নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন।’

তিনি বলেন, ‘আদালতে জন্নাত আরা ঝর্ণা মামুনুল হক কখন কোথায় নিয়ে ধর্ষণ করেছেন এর বর্ণনা তুলে ধরেন। একইভাবে গত ৩ এপ্রিল  নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টেও নিয়ে তাকে (ঝর্ণা) নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে স্থানীয় লোকজন হোটেল কক্ষে তাদের দুজনকে আটক করে।’

ঝর্ণার জবানবন্দি শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেছেন। মামুনুল হকের আইনজীবীদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবার দেন জান্নাত আরা ঝর্ণা।

মামুনুল হকের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেসবাহ জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে আগমন নিয়ে কথা বলায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলা হয়েছে।

এর আগে, সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। এ সময় মামুনুল হকের অনুসারীরা আদালত চত্বরে অবস্থান নেন। মামুনুলকে আদালতে তোলার সময় অনুসারীরা পিছু পিছু ছুটতে থাকেন, পরে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় হেফাজতের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে পুলিশ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে নিয়ে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে রওনা দেয়।

স্ত্রী পরিচয় দিয়ে গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁ রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে নিয়ে যান মামুনুল হক। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে হোটেল কক্ষে তাদের দুজনকে আটক করে। পরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা রাত ৮টার দিকে রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে মামুনুল হক ও জান্নাত আরা ঝর্ণাকে নিয়ে যায়। ৩০ এপ্রিল ঝর্ণা সোনারগাঁ থানায় বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, গত দুই বছর ধরে বিয়ের আশ্বাসে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh