নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ০৯:৪৭ পিএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১০:০০ পিএম
ফাইল ছবি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি খোয়ানোর পর রাসেল মিয়াকে ময়লাবাহী গাড়ি চালানোর সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে দুই পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. হারুন মিয়া ও মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এছাড়া বরাদ্দকৃত গাড়ি নিজে না চালিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্যকে চালাতে দেয়ায় করপোরেশনের গাড়ি চালক (ভারী) মো. ইরান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে।
ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের চাকরির বিধিমালা অনুসারে দুজনকে চাকরিচ্যুত ও একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুরো ঘটনা ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের ১১-১২৪৪ নাম্বারের ময়লার গাড়িটি পরিবহন বিভাগের (ভারী) চালক ইরান মিয়াকে বরাদ্দ দিয়েছিল ডিএসসিসি। পরে ইরান মিয়া সেই গাড়িটি চালাতে অনুমতি দেন পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মী হারুন মিয়াকে। দুর্ঘটনার দিন হারুন মিয়া সেই গাড়িটি চালাতে দেন রাসেলকে।
এছাড়া ওই গাড়িতে বর্জ্য লোড-আনলোডের দায়িত্বে থাকা পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মী মো. আব্দুর রাজ্জাক রাসেলের গাড়ি চালানোর ঘটনা বেমালুম চেপে যান।
চিঠিতে বলা হয়, তাদের ‘দায়িত্বহীন’ কর্মকাণ্ডেই সড়কের নাঈমের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তান মার্কেটের সামনে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ধাক্কা দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লাবাহী গাড়িটি। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রাসেল।
পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, রাসেল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তিন বছর আগে তার দৈনিক মজুরিভিত্তিক চাকরিটি চলে যায়। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে চাকরি হারালেও তিনি সিটি করপোরেশনের গাড়ি চালাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। এ ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রশ্রয় ছিলো বলে জানা গেছে।
এদিকে সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র দাবি করছে, রাসেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। চালক সংকটের কারণে অনেক সময় এ ধরনের কিছু লোক কাজের সুযোগ পায়।
সহপাঠী নিহত হওয়ার পর ঘাতকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দিনভর বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কর্মসূচি ছিলো নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীদের। বুধবার বিকেলে তারা নগরভবনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস শিক্ষার্থীদের মাঝে এসে বলেন, ‘যাদের কারণে নাঈমের এই মৃত্যু, সেই দোষী ব্যক্তিদের ফাঁসি চাই।’ পরে শিক্ষার্থীরা এদিনের মতো কর্মসূচি স্থগিত করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের জানান, ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈমকে আহবায়ক এবং মহা-ব্যবস্থাপক (পরিবহন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আনিছুর রহমানকে সদস্য করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ডিএসসিসি।কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।