নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২১, ০২:১৬ পিএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১, ০২:১৭ পিএম
ফাইল ছবি
বাজারে শীতকালীন আগাম সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম এখনও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। তবে কিছু কিছু সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। এতে ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি মিললেও আগের মতই দুশ্চিন্তা রয়ে গেছে অন্যান্য নিত্যপণ্যে। বেড়ে যাওয়া দামেই কিনতে হচ্ছে এসব পণ্য।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় শীতের কয়েকটি সবজি ও ডিম তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। যদিও ভোক্তাদের দাবি, ভরা মৌসুমে শীতের সবজির কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা থাকার কথা। সেই তুলনায় দাম এখনও বেশি। সবজির কেজি কিনতে হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি। ফলে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না।
বাজারে ১০ থেকে ১২ দিন আগে প্রতি কেজি শিমের দাম ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। দাম এখন তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। ৩০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে এক কেজি শিম। ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও গত সপ্তাহের তুলনায় পিস প্রতি কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। আকারভেদে এই সবজি দুটির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। তবে ১০ টাকা দাম বেড়ে পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা।
কলিসহ পেঁয়াজের কেজিতে দর পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও তিন থেকে পাঁচ টাকা কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। আগের মতোই ৫৫ থেকে ৬০ টাকা খরচ হবে দেশি পেঁয়াজ কিনতে।
এক কেজি নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আগের মতোই ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পুরোনো আলু। গাজরের দাম ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া বরবটি, পটোল, করলা, শসাসহ বেশিরভাগ সবজি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ডিমের দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। বিক্রেতারা বাজারে এক ডজন ডিমের দাম নিচ্ছেন ১০০ টাকা। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরিগর কেজি ১৫০ থেকে ১৫৫ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি গরুর মাংস ৬০০ এবং প্রতিকেজি খাশির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি।
সবজি ও ডিমের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কোনো সুখবর নেই নিত্যপণ্যের দামে। বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনির দর ৮০ থেকে ৮৪ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি কিনতে লাগবে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। দেশি মসুর ডালে পাঁচ টাকা বেশি নিতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের। প্রতি কেজি দেশি মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। আর ভারতীয় মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে।
আগের মতোই দুই কেজির প্যাকেট আটার দাম ৮০ থেকে ৮২ টাকা। আর খোলা আটার কেজি ৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৮ টাকা। দুই কেজি ময়দার এক প্যাকেটের দাম ১০৪ টাকা। আর খোলা ময়দার কেজি পাওয়া যাবে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়।
অপরিবর্তিত রয়েছে সয়াবিন তেলের দাম। খোলা সয়াবিন কেজি হিসেবে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। প্রতি কেজির দাম রাখছেন ১৫০ থেকে ১৫৫ এবং পামঅয়েল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এ ছাড়া বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ব্র্যান্ডভেদে পাওয়া যাচ্ছে ১৫৩ থেকে ১৫৮ টাকার মধ্যে।
পরিবর্তন দেখা যায়নি চালের দামে। মিনিকেটের কেজি ৫৮ থেকে ৬২, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। স্বর্ণা ও বিআর-২৮ জাতীয় চালের কেজি মানভেদে দর ৪৬ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে মাছের বাজারে দেখা গেল, ইলিশের দাম প্রায় অপরিবর্তিত। কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার টাকা আর এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকা রাখছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে টাকি মাছ। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম পরিবর্তন আসেনি।