রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রকল্প ব্যয় ও সময় বাড়ছে

মাহবুব রনি

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:১১ পিএম

কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি

কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি

রাজশাহীতে নির্মাণাধীন কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির স্থায়ী ভবনসহ আধুনিকায়ন প্রকল্পের ব্যয় ও সময় দুটিই বাড়ছে। প্রকল্প পরিকল্পনায় পরিবর্তন, অনুমোদনের অপেক্ষাসহ নানা জটিলতায় থেমে থেমে কাজ হচ্ছে। এতে প্রকল্পের প্রাথমিক পরিকল্পনার প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ হলেও পরিবর্তিত নতুন প্রস্তাবনায় ব্যয় বাড়ছে ২৫ শতাংশ এবং এক থেকে দেড় বছর সময় বাড়ছে। প্রকল্পের পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় ব্যয় ও সময় বাড়ছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে আধুনিক এই প্রশিক্ষণ একাডেমির কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, মেট্রোপলিটন নগরী রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় ১৯৯৫ সালে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জেল সুপারদের ৬ মাস মেয়াদি ৬টি, ডেপুটি জেলাদের ৩ মাস মেয়াদি ১০টি এবং কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের ৩ মাস মেয়াদি ৩৭টি ব্যাচে মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কারা অধিদপ্তরের অধীনে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির রাজশাহীর সার্বিক সমন্বয়কের ভূমিকায় রয়েছেন ডিআইজি প্রিজন্স। কমান্ড্যান্টের দায়িত্বে আছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, কোর্স কো-অর্ডিনেটর ও প্যারেড অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন একজন ডেপুটি জেলার। একজন প্রধান প্রশিক্ষক ও ৯ জন সহকারী প্রশিক্ষকের মাধ্যমে কারারক্ষীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

তবে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির তেমন অবকাঠামো সুবিধা না থাকায় যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির স্থায়ী ভবন নির্মাণসহ আধুনিকায়নে ২০১৫ সালের জুনে একনেকে ৭৩ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি নানা জটিলতায় কাজ শুরুই করে ২০১৮ সালের জুন মাসে। যেটা ২০২০ সালের ৩০ জুনে শেষ করার কথা ছিল; কিন্তু বর্তমানে পরিবর্তিত পরিকল্পনার নতুন করে সময় ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাবনা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন, কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. সঞ্জয় চক্রবর্তী।

পরিকল্পনায় তিন তলা এমআই বিল্ডিং, মেইল ও ফিমেইল ট্রেইনি ব্যারাক, প্যারেড গ্রাউন্ড, কোয়ার্টার ও ৫ হাজার ৯৯২ বর্গফুটের একাডেমিক অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভবনের সঙ্গে নতুন করে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং, এমআই ভবনে নতুন করে দুটি ফ্লোর, ডাইনিং কাম কিচেনসহ এসি ও লিফটের প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির স্থায়ী ভবনসহ উন্নয়ন প্রকল্পের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে আগের পরিকল্পনার সঙ্গে নতুন কিছু বিষয়যুক্ত হচ্ছে। ভবনে এসি, লিফট ও ফ্লোর বাড়ানো হচ্ছে। এতে প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আরও এক থেকে দেড় বছর লাগবে। ব্যয়ও ২৫ শতাংশ বাড়বে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য মোট ১০০ একর জমিতে প্রকল্পের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিল। যেখানে কেন্দ্রীয় কারাগারের জমি ছাড়াও ৪৭ একর জমিতে অ্যাসল্ট গ্রাউন্ডসহ কিছু সহায়ক স্থাপনা নির্মাণের জন্য পদ্মার জেগে ওঠা চরের জমি ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে চাওয়া হয়েছিল; কিন্তু রাজশাহীর বিভিন্ন মহলের বিরোধিতার কারণে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রায় ৬৬ একর জমির মধ্যে ২৪ একর জমিতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্রকল্পের দায়িত্বরত রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১ এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার হারুনার রশিদ জানান, ল্যান্ড ডেভেলপসহ বিভিন্ন জটিলতায় এই প্রকল্পের কাজ দেরিতে শুরু হয়েছিল। তবে এখন নির্মাণাধীন ভবনগুলোর প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই ভবনগুলোর বাকি কাজ এক দেড় মাসের মধ্যেই শেষ করা যাবে; কিন্তু পরিবর্তিত পরিকল্পনায় বেশ কিছু বিষয় সংযোজন হচ্ছে। যেটার প্রস্তাবনা পাঠানোর প্রসেসিংয়ের মধ্যে আছে। এটা অনুমোদিত হয়ে কাজ শেষ হতে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh