মানিক রাইহান বাপ্পী, রাবি
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পঠন-পাঠন কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে কয়েক বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ইন্টারনেট সুবিধা চালু হয়। এ সুবিধার নামে শিক্ষার্থীদের থেকে ফি আদায়ও করা হয়। এতে আয় হয় লাখ লাখ টাকা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা। বর্তমানে খুড়িয়ে চলছে রাবির ইন্টারনেট। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে পঠন-পাঠনে চরম ভোগান্তি পেতে হচ্ছে তাদের।
অভিযোগ রয়েছে, সংযোগ ও দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সির কারণে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
আইসিটি সেন্টার সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সার্ভারের গতি ২ দশমিক ৮০ জিবিপিএস। এটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাউটারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। ইউজার কম থাকায় ভোরের সময় ইন্টারনেট ভালো পায়। দিনের অন্য সময়ে ইউজার বেশি হওয়ায় স্পিড খুবই কম থাকে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন, লাইব্রেরি ভবন, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, একাডেমিক ভবনসহ আবাসিক হলগুলোতে ওয়াইফাই ব্যবস্থার খুবই শোচনীয় অবস্থা। দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সির কারণে ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায় না। বিশেষ করে হল ও একাডেমিক ভবনগুলোতে এই সমস্যা প্রকট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদের মোট আবাসিক হল রয়েছে ১৭টি। এতে আবাসিক আসন রয়েছে প্রায় ৮ হাজার। আবাসিক প্রতিটি শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট ফি বাবদ প্রদান করতে হয় ৪০০ টাকা করে।
হিসাব করে দেখা যায়, ইন্টারনেট সুবিধা বাবদ আবাসিক শিক্ষার্থীদের থেকে আয় হয় প্রায় ৩২ লাখ টাকা। অন্যদিকে অনাবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ১৬ হাজারের বেশি। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের থেকে বছরে ১৮০ টাকা করে ফি আদায় করে বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে প্রায় ২৮ লাখের বেশি টাকা আয় হয়। সবমিলিয়ে রাবির ইন্টারনেট সেবা বাবদ প্রায় ৪৪ লাখ টাকা আয় হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। সে অনুযায়ী ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন পলাশ জানান, ইন্টারনেটের জন্য আমরা একটা ফি দিই। এরপরও প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পাই না। বিভাগের পড়াশুনা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইন্টারনেটে দেখতে হয়। গতি একেবারেই দুর্বল হওয়ার কারণে কোনো কিছু ডাউনলোড করতে পারি না। তাছাড়া কোনো কিছু সার্চ দিলে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পর পেজ ওপেন হয়।
ইন্টারনেট ব্যবস্থার এই বেহাল দশা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. বাবুল ইসলাম বলেন, আবাসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে ইন্টারনেট সমস্য নিয়ে মিটিং হয়েছে। তারা উদ্যোগ নিলে আইসিটি সেন্টার সব ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত আছে। মূলত ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াইফাইয়ের স্পিড কম হচ্ছে বলে মনে করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ইন্টারনেটের যাবতীয় যন্ত্রাংশ অব্যবহৃত ছিল। ফলে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া আমাদের লোকবলেরও সংকট রয়েছে। উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেছি। আশা করছি, দ্রুত এ সংকট নিরসন করা হবে।