স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৪:০৬ পিএম
অবশেষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে এসে ড্র করল ইংল্যান্ড
চারপাশে ঘিরে আছেন ফিল্ডাররা। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স নিয়ে এলেন স্টিভেন স্মিথকে। বোলিং তিনি আগেও করতেন; কিন্তু এখন তো ব্যাটসম্যান পরিচয়টাই স্মিথের জন্য বড় হয়ে গেছে। তবে অধিনায়ককে হতাশ করেননি স্মিথ। এনে দিয়েছিলেন উইকেট। যদিও শেষ পর্যন্ত অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টটি জেতা হয়নি তাদের।
পরের দুই ওভার ঠেকিয়ে দেয় ম্যাচ ড্র করে ফেলেছেন অ্যান্ডারসন ও ব্রড। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের সমাপ্তিটা হয়েছে ড্রতে। ৩৮৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান করেছে ইংল্যান্ড। প্রথম তিন ম্যাচে জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। অবশেষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে এসে ড্র করল তারা।
এবারের অ্যাশেজের প্রথম তিন টেস্টেই ইংল্যান্ড হেরেছে বেশ বড় ব্যবধানেই। চতুর্থ টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ছিল দলটির। সম্ভাবনা জাগিয়েছিল জয়েরও।
৪ উইকেটে ১৯৩ রান করেছিল দলটি। অন্যদিকে জয়ের ধারা ধরে রাখতে মরিয়া ছিল অস্ট্রেলিয়া। ফলে সিডনিতে লড়াইটা বেশ জমে ওঠে। কিন্তু কাজটা প্রায় করেও করতে পারলো না স্বাগতিকরা।
আগের দিনের বিনা উইকেটে ৩০ রান করা ইংলিশদের জিততে হলে শেষ দিনে করতে হতো ৩৫৮ রান। চতুর্থ ইনিংসে পঞ্চম দিনের উইকেট বিচারে কাজটা বেশ কঠিনই। তাই জয়ের চেয়ে ম্যাচ বাঁচানোই সহজ ছিল ইংলিশদের। সে কাজটাই করেছে দলটি।
এক পর্যায়ে জয়ের খুব কাছেই চলে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর একটি উইকেট পেলেই জয় পেত দলটি। তখনও ইংলিশদের খেলতে হতো আরও ১২টি বল। উইকেটে তখন দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসন।
অভিজ্ঞতা থাকলেও দুইজনই যে মূলত বোলার। তবে জয় হয়েছে অভিজ্ঞতারই। শেষ দুই ওভার অনায়াসেই উইকেটে কাটিয়ে দিয়েছেন তারা। এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে ১৬ রান যোগ করতেই স্কট বোল্যান্ডের শিকার হন ওপেনার হাসিব হামিদ।
আর ব্যক্তিগত ৪ রানে ডেভিড মালানকে বোল্ড করে দেন নাথান লায়ন। এরপর দলীয় ৯৬ রানে দারুণ ব্যাট করতে থাকা জ্যাক ক্রাউলিকে হারালে বড় চাপে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। অথচ এই ৯৬ রানের ৭৭ রানই আসে ক্রাউলির ব্যাট থেকে।
এরপর অধিনায়ক জো রুটের সঙ্গে দলের হাল ধরেন বেন স্টোকস। ৬০ রানের জুটি গড়েন। রুটকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন বোল্যান্ড। স্কোরবোর্ডে আর ৩৭ রান যোগ হতে স্টোকসও ফিরে যান লায়নের বলে স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তখন পরাজয়টা চোখ রাঙাচ্ছিল ইংলিশদের।
সে সম্ভাবনা আরও জোরালো করেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দলীয় ২১৮ রানে জস বাটলার ও মার্ক উডকে ফিরিয়ে জোড়া ধাক্কা দেন। ইংলিশদের আশা তখন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জনি বেয়ারস্টোকে ঘিরে। জ্যাক লিচের সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যান; কিন্তু বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে ফের স্বপ্নটা ফিকে করে দেন বোল্যান্ড। তখন মনে হয়েছিল আরও একটি হারই লেখা রয়েছে তাদের গল্পে। স্টুয়ার্ট ব্রডকে নিয়ে তখন লড়াইটা চালিয়ে যান জ্যাক লিচ। ৪৬ বল মোকাবেলা করে ম্যাচ বাঁচানোর কাজটা চলছিল তাদের।
এ সময়ে অজি অধিনায়ক কামিন্স বল হাতে তুলে দেন পার্টটাইম স্পিনার স্টিভ স্মিথের হাতে। তাতে সাফল্যও মিলে তাদের। ওভারের শেষ বলে লিচকে স্লিপে ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচে পরিণত করলে দারুণ জমে যায় ম্যাচ। তবে শেষ পর্যন্ত অজিদের হতাশ করেন ব্রড ও অ্যান্ডারসন।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন ক্রাউলি। ১০০ বলে ১৩টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ১২৩ বলে ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬০ রানের ইনিংস খেলেন স্টোকস। বেয়ারস্টোর ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। শেষদিকে ২৬ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন লিচ। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন বোল্যান্ড। ২টি করে উইকেট নেন কামিন্স ও লায়ন।