রঙিন ছাতার মতো ফুলগুলো

মোকারম হোসেন

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:০৩ এএম

মোকারম হোসেন

মোকারম হোসেন

আমাদের দেশে লেডিস আমব্রেলা নামেই পরিচিত। নামটা বেশ চটকদার। তবে যথার্থও বটে। প্রথম দেখি রমনা পার্কে। পার্কের তত্ত্বাবধায়ক জিয়াউল হাসান এক দিন নিয়ে গেলেন গাছটি দেখাতে। আগে কতবার যে এ গাছের আশপাশ দিয়ে হেঁটেছি তার হিসাব নেই। তখন ভেবেছি বাগানবিলাসের ঝাড়। ফুল ও পাতাগুলো দূর থেকে দেখতে অনেকটা সেরকমই। এ কারণে আগ্রহ নিয়ে দেখা হয়নি কখনো।

ভালোভাবে তাকিয়ে দেখি কমলা রঙের ফুলগুলোর গড়ন অনেকটা ছাতার মতোই। মাঝখানে বেশ যুৎসই একটা ডাঁটিও আছে। ফুলগুলো নিখুঁত বিন্যাসে ফুটে আছে গাছজুড়ে। জানা মতে, বলধা গার্ডেন বা বোটানিক্যাল গার্ডেনে আর কোনো গাছ নেই। 

লেডিস আমব্রেলা (Holmskioldia sanguinea) আশ্রয়ে গড়ান গুল্ম ধরনের শক্ত লতা। লেডিস হেডপ্ল্যান্ট, চাইনিজ হ্যাট প্ল্যান্ট ও ম্যান্ডারিন হ্যাট নামেও পরিচিত। পাতা একক, আগা চোখা, বোঁটা আড়াই সেমি লম্বা, গাঢ়-সবুজ, নিচ ফ্যাকাশে ধরনের, বিপ্রতীপ, ডিম্বাকার বা লম্বা-ডিম্বাকার, ৪ থেকে ৬ সেমি লম্বা, কিনার ঈষৎ দাঁতানো। কচি পাতা ও কুঁড়ি রোমশ। 

প্রস্ফুটনকাল অক্টোবর থেকে জানুয়ারি। ফুল ডালের আগায় অথবা পাতার কোলে গুচ্ছবদ্ধভাবে থাকে। বৃত্তি ঘণ্টাকৃতির, প্রায় ২ সেমি চওড়া, দেখতে লালচে কমলা রঙের। দল নলাকার এবং বহিস্থ, ঠোঁটাল, ২ সেমি লম্বা ও ওপরের ঠোঁট দুই খণ্ডে বিভক্ত, নিচের ঠোঁট তিন খণ্ড। ডিম্বাশয় ৪ কোষি। গর্ভদণ্ড লম্বাটে, গর্ভমুণ্ড ২-বিভক্ত। পুংকেশর ৪টি, ২-গুচ্ছ। ফল ডিম্বাকার, চার খণ্ড, বীজের সংখ্যাও চার।

এরা উপ-হিমালয় অঞ্চলের প্রজাতি। পৃথিবীর অন্যান্য উষ্ণমণ্ডীয় অঞ্চলে হলুদ প্রজাতির ফুলও সহজলভ্য। পূর্ব সিলেটের পাহাড়ে আপনাআপনিই জন্মে। আলঙ্করিক গুল্ম হিসেবে বাগানেও চাষযোগ্য। ফুলদানিতেও বেশ মানানসই। বংশ বৃদ্ধি দাবাকলমে। চাষের জন্য অপেক্ষাকৃত উঁচু ও উর্বর স্থান প্রয়োজন। গোড়ায় জল জমলে বাঁচে না।


লেখক : মোকারম হোসেন, নিঃসর্গবিদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh