‘করোনাকে সরকার রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:২১ পিএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

করোনাকে সরকার রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এর অর্থ এই নয় যে সরকারের বিধিনিষেধ দীর্ঘকাল মানতে আমরা বাধ্য। সময়ই আমাদের বলে দেবে কখন কী করতে হবে।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া নাগরিক ফেরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

গয়েশ্বর বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে কর্মসূচি হয়েছে। বিএনপির শক্তি সরকার পরিমাপ করতে পেরেছে। এ কারণেই সরকার করোনা নামক বিধিনিষেধের অস্ত্রটি ব্যবহার করেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের জরীপেও ৮৮ শতাংশ মানুষ বলছে রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এখন শীতকাল, ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। করোনার বিধিনিষেধ দিয়ে সরকার আরো ঠান্ডা করেছে। সরকার কৌশল করতে পারে। যদি রাজপথ উত্তপ্ত হয় এবং তাদের পতন হয় তাহলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। এই ঠান্ডায় ঠান্ডা মাথায় কেটেও পড়তে পারে। পরিবেশ কিন্তু তাই বলছে।

পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর দেশের মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ কমবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেশেই যদি থাকতে হবে সরকারে বা বিরোধী দলে যেখানে থাকেন শান্তিতে থাকতে পারবেন সেই উদ্যোগ গ্রহণ করুন। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিন। এতে করে দেশের মানুষের আপনাদের ওপর যত ক্ষোভ আছে, আপনাদের যতটা ঘৃণা করে তা কমে যেতে পারে। 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অনেকদিন ধরে উপলব্ধি করেছি, ঘরে বসে আলোচনা করে সমস্যার ফয়সালা হবে না। পরিবেশ পরিস্থিতিতে রাজপথের পাশাপাশি ঘরকে অবহেলা করারও সুযোগ কম। 

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করে গয়েশ্বর বলেন, বিদেশীরা কাকে অপছন্দ করছে বা করছে না তা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু যাদের নাম তালিকায় ছিলো না তারাও ঝাঁকে ঝাঁকে ফেরত আসছেন। অর্থাৎ সরকারের ভেজাল মাল যা বিদেশে চালান করতে চেয়েছিল সব ফেরত আসছে। আবার বিদেশীরা যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদেরকে সরকার পুরস্কারও দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তারা বিশ্ব বিবেককে চ্যালেঞ্জ করল বলে মনে করেন গয়েশ্বর।

তিনি বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সরকার যদি তাদের বিচারের আওতায় আনত তাহলে বিশ্ববাসীর রুষ্টতা কিছুটা লাঘব হতে পারত। কিন্তু তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। আসলে এদের বুদ্ধিকম মনে হচ্ছে।

প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন আইন প্রসঙ্গ টেনে সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, এর আগে বিনা কাবিনে সংসার করেছেন, এখন কাবিন করে সংসার করবেন। যতদিন বিনা কাবিনে সংসার করলেন, সেই অপকর্মের বিচার হবে না?

মন্ত্রী-এমপি ও নেতাকর্মীসহ সরকারের নানা দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, হয়ত বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কারাগারে যাওয়ার পর্বটা শেষ হবে। তবে, কারাগার ফাঁকা থাকবে না। নানা দুর্নীতি, সন্ত্রাসসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ক্ষমতাসীনদের কারাগারে যেতে হবে। দ্বিগুণ বড় করতে হবে কারাগার। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকারের জাতীয় সংসদে যারা আছেন, তাদের দেশের মানুষ ভোট চোর বলে। চোর তো চোরই। চোর কখনো সাহসী হয় না। চোরদের যারা সাহসীভাবে তারা কাপুরুষ। আশাকরি আমরা কাপুরুষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হব না। জিয়াউর রহমান সম্মুখভাগে যুদ্ধ করে যেমন দেশ স্বাধীন করেছেন, তেমনি যায় রক্ত যাক সকল বাধা মোকাবেলা করে জনগণের অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই। আমরা যদি সরকারের নির্যাতনের কথা না ভেবে ঘুরে দাঁড়াই এই চোররা পালাবে।

সংগঠনের সভাপতি মিয়া মোহা. আনোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জামানের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh