রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা

গাম্বিয়াকে অর্থ সহায়তা দিতে কানাডার প্রতি মোমেনের আহ্বান

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:৪০ এএম | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:৫১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার কার্যক্রমের জন্য গাম্বিয়াকে আর্থিকভাবে সহায়তা দেয়ার জন্য কানাডার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে গত সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হারজিত সজ্জনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। 

ঢাকায় প্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।

মোমেন এই বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণের জন্য কানাডার প্রতি আহ্বান জানান। আশঙ্কা রয়েছে যে, এখানে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত অবস্থান শিবিরগুলোতে চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের সম্ভাব্য উত্থানের ফলে বিশাল নিরাপত্তা হুমকি ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে। বাস্ত্যুচ্যুত ও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য অব্যাহত রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি আইসিজেতে চলমান গণহত্যা মামলার জন্য সহায়তা প্রদান করায় কানাডাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

ড. মোমেন বাংলাদেশের দৃঢ় প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করেন, কানাডা ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেবে।

কানাডার অনুরোধে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই মন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে সরকার প্রধান পর্যায়ের সফরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উভয় মন্ত্রী একমত হয়েছেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ ‘ব্লু রিবন’ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।  

বাংলাদেশে আরও কানাডিয়ান বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে ড. মোমেন কানাডার সঙ্গে একটি মুক্ত বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ বা পিটিএ) করার বিষয়ে বাংলাদেশের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি ঢাকা ও টরন্টোর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর অগ্রগতি নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন।

কানাডায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশকে স্টুডেন্ট ডাইরেক্ট স্ট্রিম (এসডিএস) প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সম্প্রতি বাংলাদেশের জন্য কোভিড-১৯ টিকা প্রদান করায় কানাডার প্রশংসা করেন।

এলডিসি থেকে উত্তরণ সহ বাংলাদেশের চকমকপ্রদ অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে কানাডার মন্ত্রী আশ্বাস দেন যে, তিনি কানাডার বাণিজ্য মন্ত্রীর সঙ্গে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ডিএফকিউএফের মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা এবং এফটিএ বা পিটিএ স্বাক্ষরের সম্ভাবনা সম্পর্কেও আলোচনা করবেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি একমত প্রকাশ করেন যে, চূড়ান্ত সমাধান হতে হবে নিরাপদ প্রত্যাবাসন। প্রত্যাবাসনের জন্য জোরদার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এবং কানাডা রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

তিনি উন্নয়ন সহায়তাসহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে সহায়তা অব্যাহত রাখতে কানাডার সদিচ্ছা ব্যক্ত করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন ১৪ ফেব্রুয়ারি কানাডা-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি বিবৃতি প্রদান করেন। -বাসস

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh