‘চারিপাশে ময়লা নাই, এমন একটি বাজার চাই’

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:৫৭ পিএম | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:৫৮ পিএম

বাজারে ঝাড়ু দিচ্ছেন হেলাল উদ্দিন। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

বাজারে ঝাড়ু দিচ্ছেন হেলাল উদ্দিন। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

যে কেউ কাজটি লজ্জার কারণে করতে চাইবেন না। আবার কেউ করতে রাজি হলেও বিনাপারিশ্রমিকে কাজটি করবেন না। বিনা সঙ্কোচে কোনো কিছুর বিনিময় ছাড়া ২৬ বছর ধরে সেই কাজটি করে আসছেন হেলাল উদ্দিন।

১৯৯৬ সাল থেকে মহেশ্বরচাঁদা বাজার নিজে পরিষ্কার করে আসেছন তিনি। এই সাদা মনের মানুষটি বাজর ঝাড়ু দিয়ে আসছেন নিজ হাতে।

হেলাল উদ্দিনের বয়স ৭২ ছুঁই-ছুঁই। ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরচাঁদা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। কৃষিকাজ করে সংসার চালান তিনি। স্ত্রী মাহিরন নেছা আর চার মেয়ে, তিন ছেলে নিয়ে তার সংসার। এলাকায় ‘হেলাল চাচা’ নামে পরিচিত তিনি।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘চারিপাশে ময়লা নাই, এমন একটি বাজার চাই’ এই বিষয়টি আমার মনে গেঁথে আছে। আমার আর কিছু চাওয়া নাই। এই একটাই চাওয়া।

ঝিনাইদহের মহেশ্বরচাঁদা বাজার আয়তনে খুব একটা বড় নয়। বাজারে ১৫ থেকে ১৮টি দোকান রয়েছে। দৈনিক প্রায় কয়েকশ’ মানুষ যাওয়া আসা করেন।

পুরো বাজার খুঁজে কোনো ময়লা আবর্জনা পাওয়া যাবে না। বাজারে ময়লা পড়ে থাকতে দেখা গেলে সবাই বুঝে যান, হেলাল চাচা অসুস্থ বা গ্রামে নেই বলে জানান এলাকার তরুণরা।

পরিবার জানায়, ভোর হলেই হাতে ঝাটা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়েন তিনি। গ্রামের মসজিদে  ফজরের নামায আদায় করে মসজিদ থেকেই বাজরে চলে যান ঝাড়ু দিতে।

হেলাল উদ্দীন বলেন, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। কৃষক পিতার সন্তান তিনি। তারা তিন ভাই এক বোন। দুই ভাই মারা গেছেন। তার বাবার ৭০ শতক জমি ছিল। দ্বিতিয় শ্রেণির বেশি পড়ালেখা করতে পারেননি। বাবার সাথে মাঠে কাজ করে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে।

তিনি আরো বলেন, মানুষের সেবা করাই তার মূল উদ্দেশ্য। তিনি বিনিময়ে কিছুই চান না। সবাই ভালো থাকুক এটাই তার প্রত্যাশা।

গ্রামের বাসিন্দা আবদুল সালেক জানান, হেলাল উদ্দিন ব্যতিক্রমী একজন মানুষ। তার মতো পথ দেখানো মানুষ সমাজে পাওয়া খুবই দুস্কর।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh