নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:০৬ পিএম
ইউক্রেন যুদ্ধ
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলছে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলা। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের ১১টি বিমানঘাঁটিসহ ৭০টিরও বেশি সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে। রাজধানী কিয়েভের কাছে চলছে তীব্র লড়াই, নিহত বিপুল সংখ্যক মানুষ।
সামরিক আগ্রাসন এখন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে পৌঁছে গেছে। সেখানে তীব্র লড়াই চলছে রুশ বাহিনী ও ইউক্রেনের মধ্যে। রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ হামলা প্রতিরোধ করার জন্য জীবনমরণ লড়াই করছেন ইউক্রেনের সেনারা।
ইউক্রেন দাবি করেছে এই লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীর খুব কাছে তুমুল লড়াই চলছে। লড়াই যেহেতু রাজধানীর কাছাকাছি চলছে, তাই এক্ষেত্রে রাশিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে। রাশিয়া কি আসলেই পুরো ইউক্রেন দখল করে নিতে চায়? অনলাইন বিবিসি বলছে, কিয়েভ শহরের বাইরে একটি বিমানঘাঁটিতে লড়াই চলছে।
যদি রাশিয়ার সেনারা তা দখল করে নিতে পারে তাহলে কিয়েভ দখল করা তাদের জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার ভোরে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। প্রথমে পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ করে। কিন্তু সেই লড়াই এখন বিভিন্ন ফ্রন্টে হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কড়া সতর্কতা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হামলা হলে রাশিয়াকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
দৃশ্যত, এখন পর্যন্ত হামলার জবাব হামলার মাধ্যমে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে না কোনো দেশ। সব দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ যাবতকালের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পথেই হাঁটছে। শুধু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষকে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার এ আহ্বানে সাড়া দিয়েছে ইউক্রেনের মানুষ।
বিয়ের আসর থেকে যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেনের নবদম্পতির চলে যাওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। যুদ্ধবিমানের বিকট শব্দের মাঝে বৃহস্পতিবার রাজধানী কিয়েভের সেন্ট মাইকেল ক্যাথেড্রালে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারলেন স্ভিয়াতোস্লেভ ফারসিন (২৪) ও ইয়ারিনা আরিয়েভা (২১)।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক সুন্দর রেস্তোরাঁর ছাদ বারান্দায় উদযাপন করার কথা ছিল জীবনের অন্যতম এই মুহূর্তটা। তার পাশে বহমান দিনেপার নদী। ২১ বছর বয়সী আরিয়েভার ভাষায়, ‘কেবল আমরা ও নদী। সঙ্গে সুন্দর আলো।’কিন্তু সেই স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিচ্ছেন তারা।
এই দম্পতি জানেন না, ভবিষ্যৎ তাদের জন্য কী বয়ে আনছে। যুদ্ধের ভয়ে যখন ইউক্রেনের মানুষ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে, তখন বিয়ের পর নিরাপত্তার খোঁজে কোথাও যাচ্ছেন না এই দম্পতি। তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, দেশেই থাকবেন এবং যুদ্ধ করবেন।
দেশকে সাহায্য করতে স্থানীয় টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স সেন্টার বা প্রতিরক্ষা কেন্দ্রে যোগ দিচ্ছেন এই নবদম্পতি।
অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, যুদ্ধে যাচ্ছেন বাবা, কেঁদে বিদায় জানাচ্ছেন মেয়ে। যুদ্ধ মানে অনিবার্য ধ্বংস, রক্তক্ষয়, অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি। পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে- এক শিশুকন্যা তার বাবাকে বিদায় জানাতে এসেছে। বাবা-মেয়ে দুজনের চোখেই পানি। বাবা-মেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রয়েছে। চোখে ঝরে পড়ল অশ্রুধারা। বাবা বারবার তার মেয়েকে আদর করছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভিডিওটি খুবই আবেগবিহ্বল। আর সেই ভিডিও মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। আর এই ভিডিও দেখে অনেকেই চোখের পানি চেপে রাখতে পারছেন না।
তবে যখন এই যুদ্ধ চলছে তখন ভুল, বিভ্রান্তিকর অনেক ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে।