নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:১৯ পিএম
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
লিটন-মুশফিকের রেকর্ড জুটিতে ৩০৬ রান করে বাংলাদেশ। ৮৯ রানের জুটি গড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছিলেন রহমতশাহ-নাজিবুল্লাহ জাদারান। অবশ্য তাসকিনের আঘাতে এই জুটি ভাঙার পরেই মিলিয়ে গেছে সব শঙ্কা। তাতে লিটন-মুশফিকের গড়ে দেয়া মঞ্চেই এলো ৮৮ রানের অসাধারণ এক জয়। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে নেওয়ায় এক ম্যাচ আগে নিশ্চিত করলো সিরিজও।
চট্টগ্রামে শুরুতেই আফগানদের চাপে ফেলে দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ৩৪ রানে তুলে নিতে পেরেছিল ৩ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতেও সফরকারীরা যে মাথা তুলতে পারবে, অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হচ্ছিল না। রহমত-নাজিবুল্লাহ জুটি পরে সেটিই করে দেখাচ্ছিলেন। দুজনের হাফসেঞ্চুরি আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছিল আফগান শিবিরের। কিন্তু ২৫তম ওভারে রহমতকে ফিরিয়ে ম্যাচের পুনরায় নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। তাসকিনের বলে বেলস পড়ে যাওয়া রহমত করেছেন ৫২ রান। জুটি ভাঙার পর সঙ্গী নাজিবুল্লাহও বেশি দূর যেতে পারেননি। তাসকিনের ২৯তম ওভারে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। তাতে ৫৪ রানে ফিরতে হয়েছে নাজিবুল্লাহকে।
আফগান ইনিংসের মূল আকর্ষণই ছিল ওই দুজনের ব্যাটিং। জুটিটা আগেই ভাঙা যেত, যদি না ১৭তম ওভারে জাদরানের ক্যাচ মিস করতেন শরিফুল।
শেষ স্বীকৃত জুটি হিসেবে রহমানুল্লাহ গুরবাজ কিংবা মোহাম্মদ নবী সেভাবে ঝলক দেখাতে পারেননি। চোটের কারণে পরে নামা গুরবাজতো সাকিবের বলে বোল্ড হয়েছেন। করেছেন মাত্র ৭ রান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে নবী ৪০ বলে ৩২ রান করলেও ততক্ষণে দিশা হারিয়ে ফেলেছে আফগানদের ব্যাটিং। নবীকে আফিফের ক্যাচ বানান মিরাজ। রশিদ খান বেশ কিছু শটস খেললেও বেশিক্ষণ সেটি চলতে দেননি মোস্তাফিজ। ২৯ রানে তাকে বোল্ড করেছেন।
শেষ ম্যাচে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জেতার পর সাকিব-তামিম প্রত্যাশা মেটাতে না পারলেও আফগানদের সামলাতে লিটন-মুশফিক জুটিই ছিল যথেষ্ট। ব্যাটসম্যানরা যখন রুদ্ররূপী হয়ে উঠেন, তখন বোলাররা যে কতটা অসহায় হয়ে পড়েন, তার স্পষ্ট উদাহরণ ছিল দ্বিতীয় ওয়ানডে। ইনিংসের মাঝপথে সাত বোলার ব্যবহার করেও লিটন দাস-মুশফিকুর রহিমকে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। বরং সফরকারীদের ওপর আগ্রাসন বাড়িয়ে রানের ফুল ফুটিয়েছেন দুই ব্যাটার। তৃতীয় উইকেটে তাদের রেকর্ড জুটিতেই ৪ উইকেটে ৩০৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ২০২ রানের যে জুটি নির্ধারণ গড়ে দিয়েছে তিনশো রানের ভিত।
একটা পর্যায়ে লিটন এতই আগ্রাসী হয়েছিলেন যে, আরো সমৃদ্ধ হতে পারতো স্কোর বোর্ড। কিন্তু ৪৭তম ওভারে ডিপ স্কয়ার লেগে লিটন ক্যাচ তুলে দিলে সেখানেই শেষ হয় বাড়তি রানের সম্ভাবনা। কারণ তার ফেরার পরের বলে ফিরেছেন আরেক সেট ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। ৮৬ রানে ক্রিজে থাকা এই ব্যাটার ক্যাচ তুলে ফিরেছেন। ৯৩ বলে ফেরা মুশফিকের ইনিংসে ছিল ৯টি চার। তার আগে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি পাওয়া লিটন ১২৬ বলে ফিরেছেন ১৩৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে। তাতে ছিল ১৬টি চারের সঙ্গে ২টি চারের মার। এ দুজন ফেরার পর আফিফ-মাহমুদউল্লাহ সেভাবে রান তুলতে পারেননি। আফিফ অপরাজিত ছিলেন ১৩ রানে, মাহমুদউল্লাহ ৬ রানে।
ফরিদ আহমেদ ৫৬ রানে নিয়েছেন দুটি উইকেট। একটি করে শিকার ফজল হক ফারুকি ও রশিদ খানের।