সাঁইজির বারামখানায় সাধুর হাট

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২২, ১১:৫৮ এএম | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২, ১২:০০ পিএম

ফকির লালন সাঁইয়ের মাজার

ফকির লালন সাঁইয়ের মাজার

সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩২তম স্মরণোৎসব উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া বাড়িতে আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।

মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই বাঙালির চেতনায় এক অবিস্মরণীয় কালপুরুষ। তার গানের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সৃষ্টির রহস্য। সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক তার গানের মূলমন্ত্র। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে একই স্রোতধারায় আনার জন্য আমরণ কাজ করেছেন এই মরমী সাধক। বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের সংগীত আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।

স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতোমধ্যে লালন একাডেমি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন নানান উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। লালন সাঁইয়ের মাজারের সাজসজ্জা ও ধোয়া-মোছার কাজ শেষ করে সাঁইজির পছন্দের সাদা ধূসর রং দিয়ে রাঙিয়ে দিয়েছে তার মাজার।

আজ সন্ধ্যা ৭টায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় ও কুষ্টিয়া লালন একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন (এনডিসি)।

সত্য সু-পথের সন্ধ্যানে মানবতার দীক্ষা নিতে আত্মার টানে দেশ-বিদেশের সাধু-গুরু ও ভক্তরা দলে দলে আসতে শুরু করেছে সাঁইজির মাজারে। বাউল সম্রাটের ১৩২তম স্মরণোৎসবের অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে তিনদিনব্যাপী। মূল উৎসব শুরু হওয়ার সপ্তাহ খানেক আগ থেকে আখড়ায় আসা বাউল সাধকরা মাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে গেয়ে চলেছেন সাঁইজির আধ্যাত্মিক মর্মবাণী ও ভেদ তথ্যের গান।

জমজমাট এখন লালন শাহের আখড়া বাড়ি। কুষ্টিয়া পরিণত হয়েছে উৎসবের শহরে। কালী নদী তীরবর্তী লালন মঞ্চের সামনে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার। বিভিন্ন স্টলের পাশাপাশি থাকছে শিশু বিনোদনেরও ব্যবস্থা।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর নির্মম অত্যাচারে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনকে যখন বিষিয়ে তুলেছিল, ঠিক সেই সময়ই বাউল সম্রাট লালন শাহর আবির্ভাব ঘটে কুমারখালির ছেঁউড়িয়াতে। লালনের জন্মস্থান নিয়ে নানা মত থাকলেও নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, লালন ফকির ১৭৭৪ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের ভাঁড়ারা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান।

আর্থিক অসঙ্গতির কারণে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করতে পারেননি। তবে তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত। যৌবনকালে পূণ্য লাভের জন্য তীর্থ ভ্রমণে বেরিয়ে তার যৌবনের রূপান্তর ও সাধন জীবনে প্রবেশের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। তীর্থকালে তিনি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে তার সঙ্গীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। পরে একজন মুসলমানের দয়া ও আশ্রয়ে জীবন ফিরে পাওয়ার পর তিনি সাধক ফকির হন। তার স্মরণে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়া লালন মাজার চত্বরে উৎসবের আয়োজন করা হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh