রিফাত রহমান, চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২২, ০৩:৩৩ পিএম | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২২, ০৩:৪৭ পিএম
সুতা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছে নারীরা
অব্যবহৃত পরিত্যক্ত কলা গাছের বাকল থেকে সুতা তৈরি করে তা হতে পাপশ, টেবিলম্যাট, বাজারের ব্যাগসহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরি করছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা শাহিন আলী। তৈরি পণ্যগুলো বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার ও দামুড়হুদা উপজেলা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে পাটাচোরা গ্রামের অবস্থান। এ গ্রামের যুবক শাহিন আলীর ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারের প্রতি। তার এ আগ্রহ আরও বেড়ে যায় মালয়েশিয়া ও ভারতের কলকাতায় অবস্থানের সময়। সেখান থেকে ফিরে ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে গ্রামের মাঠে গাছ থেকে কলা পেড়ে নেওয়ার পর অব্যহৃত পরিত্যক্ত গাছের বাকল সংগ্রহ করে এটা মেশিনে দিয়ে সুতা বের করেন তিনি। এরপর তা পানিতে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করেন। সুতা তৈরি শেষে কলা গাছের বর্জ্য থেকে ভার্মি কম্পোস্ট সারও তৈরি করছেন তিনি। এ কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছেন ওই গ্রামের ছাত্রী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধীসহ শতাধিক নারীকে। এদেরকে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে দামুড়হুদা উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা হিরা মনি, দেওলী গ্রামের গৃহবধূ রত্না ও রুনা এবং কলেজছাত্রী পাপিয়া বাড়ির উঠানে বসে রকমারি পণ্য তৈরি করতে করতে জানান, তারা উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে পরিত্যক্ত কলা গাছের সুতা দিয়ে বিভিন্ন রকম পণ্য তৈরি করছেন। এ পণ্যগুলো তৈরি করে প্রকারভেদে অর্থ উপার্জন করছেন। ফলে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় পাটাচোরা গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা শাহিন আলীকে সফল করানো চেষ্টা করা হচ্ছে। সে সফল হলে গ্রামীণ জনপদের আর্থ মানবতার উন্নয়ন সম্ভব হবে। কাজ করে অনেক বেকার নারীরা নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। শাহিন আলী পরিত্যক্ত কলা গাছ থেকে সুতা তৈরি করছে। এই সুতা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছে নারীরা। ওই সকল নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেই পণ্য দেশের বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্পেন, ফ্রান্স, কাতারসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির চেষ্টা করা হচ্ছে। কুরিয়ারের মাধ্যমে এগুলো পাঠানো হচ্ছে। এসব দেশে পণ্যের চাহিদা দেখা দিলে আরও পাঠানো হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার বিশেষ প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।