র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২২, ০১:১৭ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে গর্হিত কাজ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা নিজেদের দেশে স্বীকৃত খুনিদের স্থান দেয়, আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ অপরাধে জড়ালে সরকারের পক্ষ থেকে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে— যারা আমাদের বিনা কারণে, বিনা দোষে র্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে, কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।
র্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ সোমবার (২৮ মার্চ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। র্যাবের সদর দপ্তরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি স্পষ্ট বলি, আমেরিকায় কিন্তু… আপনারা দেখেছেন, সেখানে বাচ্চা ছেলে, পকেটে হাত দিয়েছে, তাকে গুলি করে মারলো। রাস্তায় ফেলে পা দিয়ে গলা চেপে ধরে (জর্জ ফ্লয়েড) মেরে ফেলে দিলো। সেখানে কিন্তু এই ধরনের অপরাধ কেউ করলে অর্থাৎ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে কেউ অপরাধ করলেও শাস্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু পৃথিবীতে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, এখানে কেউ অপরাধ করলে, আমরা শাস্তির বিধান করি।
র্যাবের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয়, যারা এই ধরনের অভিযান করে সাফল্য অর্জন করেছে— যেমন হলি আর্টিজানের ঘটনা, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমরা সেটা উদ্ধার করি। জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সাফল্য। আমি জানি না, আমাদের এই সাফল্যগুলোতে এদের কোনো দুঃখ পেয়েছে কিনা তা বলতে পারি না। কিন্তু বাংলাদেশ যে এই ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে— এটাই হলো সত্য। সেক্ষেত্রে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।
যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর স্বীকৃত খুনিকে স্থান দিয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সেখানে যুদ্ধাপরাধীদেরও যেমন স্থান হয়েছে, জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিও কিন্তু আমেরিকায় বসবাস করে। তাকে তারা ওখানকার নাগরিক করে নিয়েছে। আমরা বার বার বার তাদের রিকোয়েস্ট করছি, অনুরোধ করছি। প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিচ্ছি, একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছে, আমরা তাদের কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, জাস্টিজ ডিপার্টমেন্টে আমরা আহ্বান করছি, এরা অপরাধী, শিশু ও নারী হত্যাকারী, খুনি। ১৫ আগস্ট তারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। তাদের আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। তারা অপরাধীদের রক্ষা করে, তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এটা যাদের চরিত্র, তাদের বিষয়ে আর কী বলবো!
দেশের কিছু মানুষ বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সব থেকে দুঃখজনক হলো— আমাদের দেশের কিছু মানুষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালায়। আর যারা বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা কিন্তু অপরাধী। তারা কোনো না কোনো দোষে হয়তো চাকরি হারিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে।
আইন কানুন মেনে, জনগণের সেবক হিসাবে অর্পিত দায়িত্ব র্যাব সদস্যরা যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।