অভিজাত এলাকায় পানি-বিদ্যুতের দাম বেশি চান মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২২, ০৮:০৫ পিএম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

রাজধানী ঢাকায় অন্য এলাকার তুলনায় গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের দাম বেশি চান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

আজ বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে গুলশান-২-এ নগর ভবনের হলরুমে রাজস্ব বিভাগের অটোমেশন কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গুলশান-বনানী-বারিধারার মতো অভিজাত এলাকা এবং যাত্রাবাড়ির পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের চার্জ যদি সমান হয় তাহলে সবাই তো অভিজাত এলাকায় থাকতে চাইবে।

‘কেউ তো যাত্রাবাড়ী বা কম সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এলাকায় থাকবে না। তাই জোনভিত্তিক সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি।’

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অটোমেশন করার উদ্যোগের প্রসংশা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। বলেন, ‘অটোমেশিনের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে নাগরিক সেবা সহজীকরণের পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

‘অটোমেশন ব্যবস্থাপনায়ও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে তবে সেগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সকল অঞ্চলে অনলাইনের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হবে। কোনো অবস্থাতেই নগদ টাকায় লেনদেন করা হবে না। এখন থেকে অটোমেশনের মাধ্যমে ট্যাক্সসহ অন্যান্য সকল বিল নেয়া হবে। বিদেশে বসেও যে কেউ ট্যাক্স দিতে পারবেন।’

মেয়র বলেন, ‘আগে নগরবাসী ট্যাক্স পরিশোধের ক্ষেত্রে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতো। তাদের হয়রানি ও ভোগান্তি বন্ধ করতেই এরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাশলেস লেনদেনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

‘অটোমেশনের মাধ্যমে নগরবাসী যেমন ঘরে বসে কাঙ্খিত ডিজিটাল সেবা পাবেন ঠিক তেমনি এর ফলে লাঘব হবে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ত্ব। সাশ্রয় হবে সকলের সময়, কর্মঘণ্টা, কমবে গ্রাহকের ভোগান্তি ও হয়রানি।’

নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ইমেইল এড্রেস, ফোন নম্বর ও জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে খুব সহজেই একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ট্যাক্স দেয়া যাবে। আপনারা এই তিনটি তথ্যের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধ করুন।’

মেয়র আরো বলেন, ‘আপনারা অনলাইনে আপনাদের বাড়ির মাপ অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করবেন। তবে রাজউক, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ওয়াসা এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের চুক্তি হচ্ছে। এর মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন জানবে বাড়িটি কত স্কয়ার ফিটের। চাইলেও বাসার মাপ কম উল্লেখ করে ট্যাক্স ফাকি দেয়া যাবে না।’

আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, ‘রাজধানীর অনেকগুলো এলাকার বাসিন্দারা কিছু ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। তাই সেসব এলাকায় অন্য এলাকার তুলনায় ট্যাক্স রেট কিছুটা বেশি হবে।’

অনুষ্ঠানে রাজস্ব অটোমেশন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ডিএনসিসির সঙ্ দশটি ব্যাংক ও একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানির সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।

ব্যাংকগুলো হলো ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ট্রাস্ট আজিয়াটা ডিজিটাল লিমিটেড।

ডিএনসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, নগর গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, দ্যা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ডিএনসিসির কাউন্সিলর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন সোসাইটির প্রতিনিধিরা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh