নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৫১ এএম
ফাইল ছবি
প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসের আগে নির্দিষ্ট কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বাড়বে—এটিই যেন নিয়ম। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। সারা দিন রোজা রাখার পর যারা ইফতারে লেবুর শরবত পান করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ আছে। রোজা শুরুর আগেই লেবুর দাম বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহ আগেও যে লেবু প্রতি হালি বিক্রি করা হতো ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে তা বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আরো রয়েছে বেগুন, শসা, ধনেপাতা, পেঁয়াজ ও চিনি। এর সবই মূলত ইফতারি তৈরির উপাদান। আর সাহ্রিতে যারা মুরগির মাংস খেতে পছন্দ করেন, তাদেরও আগের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। এমনিতেই মাস দুয়েক ধরে বাজারে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে নতুন করে কিছু পণ্যের দাম আবার বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে। এবার যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, তার মূল কারণ মাহে রমজানের আগে হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়া।
অবশ্য কয়েক দিন ধরে মন্ত্রীরা বলছেন, সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কারণে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নতুন করে আর বাড়বে না। যদিও বাজারে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের প্রতিফলন কম।
প্রায় সব বাসাতেই রমজান মাসে ইফতারে বেগুনি থাকে। প্রতিবার রোজায় বেগুনের দাম বেড়ে যায়। ‘নিয়ম মেনে’ এবারও এই সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে এক কেজি লম্বা বেগুন বিক্রি হয়েছে মানভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগেও একই মানের বেগুন ওই বাজারেই বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে শসা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ধনেপাতার দাম ৭০ টাকা। আর কেজিতে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে দেশি পেঁয়াজ (প্রতি কেজি ৩৫ টাকা)।
রোজার জন্য কিছু পণ্য কিনতে কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে যান অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আজাদ আহমেদ। তিনি বললেন, এক সপ্তাহ আগে এক কেজি শসা কিনেছিলেন ৭০ টাকায়। এখন দামই চাচ্ছে ১০০ টাকা। দরদাম করতে গেলেই বিক্রেতারা বলছেন, ‘কিনলে কেনেন, না কিনলে নাই। কিন্তু এর চেয়ে কম দামে বেচা যাবে না।’
সবজির পাশাপাশি খোলা চিনির দামও কেজিতে ৪ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হতো ৮০ টাকায়। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট বাজারের ‘মা মসলা’ দোকানের মালিক মোখলেসুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগে ১ বস্তা (৫০ কেজি) চিনি কিনেছিলেন ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। গতকাল একই বস্তা কিনেছেন ৩ হাজার ৬৮০ টাকায় (পাইকারি দর)।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সোনালিকা (কক) মুরগি ও গরু মাংসের দাম আরেক দফা বেড়েছে। মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের একটি দোকানে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও এই বাজারে সোনালিকা ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর গরুর মাংসের দাম ছিল প্রতি কেজি ৬২০ টাকা।