নদীতে মাছ ধরতে মানা
আশিক বিন রহিম, চাঁদপুর
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২২, ০৩:৫৬ পিএম | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় চলছে দুই মাসের অভয়াশ্রম অভিযান। নিষেধাজ্ঞার এই দুই মাস নদীতে জাল ফেলে কোনো প্রকার মাছ ধরা যাবে না। অথচ ঋণগ্রস্থ জেলেদের মাথার ওপর ঝুলছে কিস্তির বোঝা।
এ পরিস্থিতিতে অর্থ উপার্জন কিংবা জীবিকা নির্বাহের বিকল্প উপায় না থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। বছরে দুইবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় চাঁদপুরের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক জেলেকে। যাঁদের উপার্জনের উপর নির্ভর করে থাকে পরিবারের সদস্যের জীবন-জীবিকা। তাই নদীতে নিষেধাজ্ঞাকালীন ঋণের কিস্তি বন্ধের দাবি তাদের।
জেলেদের অভিযোগ, বিকল্প কর্মসংস্থান ব্যবস্থা না থাকায় নিষেধাজ্ঞার এ সময় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেই আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাছ শিকারে নামতে বাধ্য হন তাঁরা। তাছাড়া তাদের দারিদ্র্যতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মৌসুমি আড়তদার-দাদনদের ফাঁদ তো রয়েছেই। পরিশেষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে গুনতে হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জেল-জরিমানা, যা তাদের পরিবারে নিয়ে আসে চরম দুশ্চিন্তা আর নিদারুণ ভোগান্তি।
চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের জেলে আমর আলী, কুদ্দুস বেপারী, জাহাঙ্গীর খান জানান, প্রতি বছর দুইবার নদীতে অভিযান দেওয়া হয়। একবার অক্টোবরে ‘মা ইলিশ’ রক্ষায়, আর একবার মার্চ-এপ্রিলে ‘জাটকা ইলিশ’ রক্ষায়। এই পৌনে তিন মাস নদীতে মাছ ধরা নিষেধ থাকে। অথচ আমাদের বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান নেই। ফলে একদিকে ঋণের কিস্তির টাকা, অন্যদিকে সংসারে অভাব-অনটন; সব মিলিয়ে এই সময়টাতে আমাদের খুবই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
এ অবস্থায় তাদের দাবি, যারা সরকারের আইন মানেন, তাদের জন্য নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন বিকল্প উপার্জনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, চাঁদপুরে সর্বমোট ৪৪ হাজার ৩৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের সহায়তায় চাল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। অভয়াশ্রম চলাকালীন মাছ ধরা বন্ধে নদীতে সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছে জেলা ট্রাক্সফোর্স। যারা মৎস্য বিভাগ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের যৌথ সমন্বয়ে কাজ করছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, সরকার জেলেদের মানবিক বিষয়টি চিন্তা করে তাদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল দিচ্ছে। এর পাশাপাশি জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন সেলাই মেশিন, গবাদি পশুসহ বিভিন্ন সহায়তা দিচ্ছে সরকার।