সঞ্জয় সরকার
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৫৩ এএম
রাংচিতা
পথের পাঁচালী উপন্যাসে ভুবন মুখুজ্যের বাড়ির ছেলেমেয়েরা যখন ঝড়ে আম কুড়াচ্ছিল অপু ও দুর্গা, সেখানে উপস্থিত হলে সতু তাদের তাড়িয়ে দেয়। মুখ ভার করে দু’জনে বিদায় হয়।
লেখকের ভাষায়- ‘সকলের সম্মুখে এইরূপ ভাব দেখাইয়া যেন অধিকতর উৎসাহের সহিত অপুকে পিছনে লইয়া রাংচিতার বেড়ার ফাঁক গলিয়া বাগানের বাহির হইয়া গেল’।
বোঝাই যাচ্ছে, একদা লোকে রাংচিতা দিয়ে বেড়া দিতো। ফলে রাংচিতার আর একনাম বেড়াচিতা। খুব সহজে শক্ত ডাল মাটিতে পুঁতে দিলে এর নতুন চারা জন্ম নেয়। গাছ, ঝোপঝাড়ের মতো বেড়ে ওঠে। প্রত্যেকটি গাছ গড়ে প্রায় আড়াই মিটার লম্বা হতে পারে। এর ডালে চিমটি কাটলে বা ভঙুর এই গাছের ডাল ভাঙলে সাদা দুধের মতো রস ঝরতে থাকে। এই রস আঁচিলের চিকিৎসায় ও বৃশ্চিকের কামড়ে বেশ উপকারী। এটি ছায়াযুক্ত স্থানেও জন্মায়।
রাংচিতার ফুল দেখতে অনেকটাই লাল। সাধারণত ফুল পাপড়িবিহীন ও এতে বৃত্যাংশ থাকে না। এর বৈজ্ঞানিক নাম এবং ইংরেজি নাম Jew’s Slipper. এটি একটি আলঙ্কারিক উদ্ভিদ। এর পাতা ডিম্বাকৃতির বা উপবৃত্তাকৃতি-ডিম্বাকার। পাতার উপরিভাগ মসৃণ; কিন্তু নিচের অংশ অমসৃণ। রাংচিতা রোপণে বিশেষ যত্ন নিতে হয় না। বীজ কিংবা ডাল থেকে খুব সহজেই গাছ জন্ম নেয় এ গাছ।