তরমুজ আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত এবং সবার প্রিয় ফল। তরমুজে আছে লাইকোপেন, এমানো এসিড, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং পানি। অতিরিক্ত ঘাম এবং তৃষ্ণা দূর করতে তরমুজের রস খুবই কার্যকর। কাজের কারণে ক্লান্তি যতই আসুক তরমুজের রস খেলে অল্প সময়েই ক্লান্তি দূর হয়। এছাড়া তরমুজের বীজ বেটে ঠান্ডা পানিতে চিনিসহ মিশিয়ে খেলে প্রস্রাবের জ্বালা, প্রস্রাবের স্বল্পতা দূর হয় এবং প্রস্রাবের ফ্লো ঠিক রেখে কিডনি পরিষ্কার রাখে। ব্রংকাইটিস বা এজমা, হেপাটাইটিস এবং হজমেও তরমুজ সাহায্য করে।
আনারসে থাকে ব্রমেলিয়ান এনজাইম, যা চর্বি ও প্রোটিন ভালোভাবে হজম করতে সাহায্য করে। আরো রয়েছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন এবং মিনারেল, বিশেষ করে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাসিয়াম। এসব উপাদান ঠাণ্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধ করে এবং হাড় শক্ত রাখে। দাঁত ও মাড়ি ভালো থাকে।
গবেষণায় প্রমাণিত, পেয়ারা রক্ত শর্করার মাত্রা উন্নত করতে সহায়তা করে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধকে হ্রাস করে। এছাড়া পটাসিয়াম এবং ফাইবার উচ্চ মাত্রায় পাওয়া যায় যার জন্য হার্ট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মানসিক স্বাস্থ্য, চোখের দৃষ্টিশক্তি জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকৃত।
ফ্রুটি/বাঙ্গি আমাদের দেশের আরেকটি জনপ্রিয় ফল। ভিটামিন বি ও সি সমৃদ্ধ এই ফল গরমে আনে স্নিগ্ধতা। এই ফলের রংও চমৎকার যা দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। জ্বরের সময় দেহের তাপমাত্রা কমাতে এই ফলের জুস খুবই কার্যকর। এই ফল পেটের সমস্যা দূর করে, বমি নিবারণ করে এবং হজম করতে সাহায্য করে। ত্বকের সমস্যায়ও এই ফল কার্যকর। প্রস্রাবের সমস্যা হলে এই ফলের রস উপকারী ভূমিকা পালন করে এবং দেহে পানির সাম্যতা ঠিক রাখে।
সফেদায় প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে, যা দেহে শক্তি যোগায়। এছাড়া এই ফলে ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে, যা হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখে। সফেদা মানসিক চাপ কমাতে, অনিদ্রা, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা দূর করতে ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হয়। বিভিন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, ভিটামিন এ, সি ও ই এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, কপার ও আয়রনসহ অপরিহার্য বহু পুষ্টি উপাদান রয়েছে ফলটিতে।
ডাবের পানি প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ মিনারেলস্, পটাশিয়াম সবকিছু মিলিয়ে উৎকৃষ্ট একটি পানীয় যা শরীরকে ঠান্ডা ও চাঙ্গা করে। ডাবের পানিতে আছে ল্যারিক অ্যাসিড যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ওজন কমাতেও বেশ সহায়তা করে।
পেটের নানা অসুখ, আমাশয়, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেল একটি উপকারী ফল। খাবার হজমে এটি সাহায্য করে। এর মধ্যে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম রয়েছে।
গরমকালে পেঁপে পাকা এবং কাঁচা খাওয়া যেতে পারে। পেঁপে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ফাইটোকেমিক্যালসের উৎস। এছাড়াও এই ফলটি পেপাইন রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধের করতে সক্ষম। পেঁপে রয়েছে বিটা- ক্যারোটিন যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগের, ক্যান্সার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। তাছাড়াও পেঁপের রস গরমে শরীরর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে।
কাঁঠাল ফাইবার-সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে। এই ফলে রয়েছে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম যা শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্টও ভাল থাকে। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন। চোখ ভাল রাখতে ভিটামিন এ যে অপরিহার্য। কাঁঠালে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও বলিরেখাও কমে। কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন বি৬ এবং প্রচুর পরিমান ক্যালোরি। তবে এতে কোনো রকম কোলেস্টেরল নেই।কাঁঠালে আয়রন থাকে যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমান বাড়ায়।
আতা ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের উপস্থিতি ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালীকরণ হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়াম, হজমের জন্য ফসফরাস, শরীরের ডিএনএ এবং আরএনএ সংশ্লেষণ ও শক্তি উত্পাদনের জন্য ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে থাকে। ফলে এটি শিশুদের জন্য অত্যন্ত উপকারি। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যোপদান রয়েছে। পাকা আতার শাঁস মিস্টি হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। এর কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে। যেমন পাকা আতার শাঁস বলকারক, বাত-পিত্তনাশক ও বমনরোধক।