ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২২, ১০:০৩ এএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২২, ১২:৪০ পিএম
কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক মনির হোসেন সুমন। ছবি : ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গতকাল শনিবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্যের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে কম্পিউটার অফিস এ্যাপ্লিকেশন বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সময় লাইভে আসেন কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক মনির হোসেন সুমন। এরপর ফেসবুকে ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের লাইভটি মুহুর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
এরপরই কমিটি বাতিলের ঘোষণা আসে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বাতিলের কারণ হিসেবে ‘মেয়াদ উত্তীর্ণের’ কথা বলা হয়েছে।
এসময় ফেসবুক লাইভে সুমনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের পরীক্ষা চলছে, সবাই লিখছে, আমি বসে আছি। সবাই লিখছে বাংলায়, আমিতো বাংলায় লিখি না, ইংলিশে লিখি। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল পরীক্ষার হলরুমে ফেসবুক লাইভ দেব। সেই ইচ্ছা আজ পূরণ হলো। ম্যাডামও দেখি আমার ভিডিও করছেন। আমরা ছাত্রলীগ, যেখানে যাবো সেখানেই বুলেট। রোজা থেকে পরীক্ষা দিচ্ছি, গোল্ডেন এ প্লাস পাব। পরীক্ষার খাতায় গ্রুপের জায়গা লিখে দিয়েছি, “এমপি আনার গ্রুপ” (সরকারি দলীয় স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার)। স্যাররা এ প্লাস না দিলে বোর্ডমোড ভেঙে ফেলবানে।’
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ইনচার্জ মাহাবুব উল ইসলাম জানান, পরীক্ষার হলে ফেসবুকে লাইভ করার ঘটনায় গতকাল শনিবার তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরীক্ষার হলে কে কোন সংগঠনের নেতা এটা আসল পরিচয় নয়। সবাই শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য হবে।
সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন জানান, ‘পরীক্ষা কক্ষে ফেসবুক লাইভে এসেছিলাম, এটা আহামরি কিছু না। বিষয়টি খারাপ কিছু বলে আমি মনে করছি না। পরীক্ষা কক্ষে তখন আমাদের ম্যাডামরা ছিলেন। সেসময় আমি নিজের ফোন থেকেই ফেসবুকে লাইভ করি। তবে ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল একটা পদে থেকে কাজটা করা উচিৎ হয়নি। কিন্তু মানুষ একটা ভুল করলে তাকে এতো চেপে ধরতে হবে কেন? তাকে সেভ করাই সংবাদ কর্মীদের কাজ। অথচ তারা সেভ না করে এটা প্রকাশ করে দিচ্ছে। বিষয়টা খুবই আশ্চর্যজনক।’
তিনি আরো জানান, কালীগঞ্জ শহরের প্রিজম কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের শিক্ষার্থী তিনি। ওই সময় তিনি পরীক্ষা দিয়ে ভাইভার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। পরীক্ষার সময় লাইভ করেননি। ছোট একটি লাইভ করেছিলেন। এরপর সেটি ডিলিট করে দিয়েছেন।
সুমন জানান, সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কমিটির একটা চিঠি পেয়েছি। সেখানে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। এখন কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মানতেই হবে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার জানান, একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এটা করতে পারে না। তিনি বিষয়টি জেনেছেন। ইতোমধ্যে বাংলদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিকভাবে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন।