নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২২, ০৯:০০ পিএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৩৯ পিএম
হাসপাতালের মূল ভবনের বাইরেও চলছে চিকিৎসা
মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে ঠাঁই নেই। বর্তমানে গড়ে প্রায় প্রতি মিনিটে একজন করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী এ হাসপাতালে আসছেন। গত একমাসে হাসপাতালটিতে রেজিস্ট্রারভুক্ত ২৯ জন রোগির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫ জনের মৃত্যুই বাসা থেকে হাসপাতালে আনার পথে হয়। হাসপাতালে আনার পর তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়। ভর্তি হওয়ার ৪ জনের মৃত্যু হয়।
আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, ডায়রিয়ার রাজধানীর এ হাসপাতালে সম্প্রতি একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় ১৪০০ রোগী ভর্তির রেকর্ড হয়েছে। এর আগে ২০০৭ সালে ১ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড ছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরু থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।
এ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দৈনিক গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জন ছিল। কিন্তু এপ্রিল মাসে দৈনিক রোগীর সংখ্যা ১২০০ থেকে ১৪০০ ছুঁই ছুঁই করছে। গত এক মাসে প্রধানত রাজধানীর পাঁচটি এলাকা- যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, গেন্ডারিয়া, মোহাম্মদপুর এবং টঙ্গী থেকে আসা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৬০ শতাংশই ত্রিশোর্ধ্ব থেকে চল্লিশ বছর বয়সী নারী-পুরুষ।
আইসিডিডিআর,বির সিনিয়র ম্যানেজার (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন) এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ রবিবার (১০ এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়। তার মধ্যে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৩৭২ জন এবং ১ থেকে ১০ এপ্রিল দুপুর ২টা পর্যন্ত ১২ হাজার ৬১১ জন রোগী ভর্তি হয়। দিনক্ষণ হিসেবে (১ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল) ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ১ হাজার ২৭৪ জন, ১ হাজার ২৭৪ জন, ১ হাজার ১৭১ জন, ১ হাজার ৩৮৩ জন, ১ হাজার ৩৭৯ জন, ১ হাজার ৩৭০ জন, ১ হাজার ৩৮২ জন, ১ হাজার ৩৭৫ জন, ১ হাজার ২৯৬ জন এবং ৭০৭ জন।
বর্তমান ডায়রিয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে এ কথা সত্য। কিন্তু প্রতি বছরই এমনটা হয়ে থাকে। তবে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি বলে তিনি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ডায়রিয়া রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা (ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায়) চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি রাজধানীসহ সারাদেশে জেলা উপজেলা পর্যায়ে মাইকিং করে বিশুদ্ধকরণের জন্য পাঁচ মিনিট পানি ফুটিয়ে গরম করে খেতে বলা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও দেওয়া হচ্ছে।