সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৫ পিএম
ছায়ার হাওরের মাউতির বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে। ছবি : সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের মাউতির বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে হাওরে পানি ঢুকে তলিয়ে যাচ্ছে পাকা বোরো ধান। আজ রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলা সদরের সুলতানপুর গ্রামের পাশে মাউতিতে ছায়ার হাওরের বোরো ফসল রক্ষার ৮১ পিআইসির বাঁধটি ভেঙে যায়।
শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরে চার হাজার ৬০০ হেক্টর জমি রয়েছে। এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলা ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরি ও কিশোগঞ্জের ইটনা উপজেলার হাজারো কৃষকের ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে এই বাধঁ ভেঙে যাওয়ায়।
আজ ভোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিআইসির নির্মিত এ বাঁধটিতে ফাটল দেখা দেয়। পরে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করতে থাকে। বাঁধ ভাঙার এই দৃশ্য দেখে হাজার হাজার কৃষক তাদের অবশিষ্ট জমির ধান কাটতে হাওরে নেমে গেছেন।
তবে সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ছায়ার হাওরের অধিকাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে।
উপজেলার ঘুঙ্গিয়ার গ্রামের কৃষক বকুল দাশ জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জমির ধান ও খড় জমিতেই থাকবে। হাওরের ৫০ ভাগ জমির পাকা ধান কেটেছেন। তবে ধান ও খড় হাওরেই রয়ে গেছে। কাটা ধানও আনতে পারবে না।
শাল্লা উপজেলার বাহারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু জানান, এই হাওরে সবচেয়ে বেশি জমি শাল্লা উপজেলার। কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন ও নেত্রকোণার খালিয়াজুরি উপজেলার কৃষকদের জমি আছে। হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হাওরের কৃষকদের অর্ধেক জমির ধান পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে। বাকি অর্ধেক ধান কাটা বাকি আছে। এই অবস্থায় হাওর তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব দাবি করেছেন, গতকাল শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১১টায় কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে। রাতের ওই সময় তদারকিতে কেউ না থাকায় বাঁধটি ভেঙে গেছে। নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়েছে। পানির চাপে আজ সকালে বাঁধ ভেঙে গেছে।
এখন হাওরে পানি প্রবেশ করছে। তবে কৃষকরা ইতোমধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ জমির ধান কেটে নিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, ছায়ার হাওরে ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। বাকি ফসল হাওর তলিয়ে যাওয়ার আগেই কৃষকরা কাটার চেষ্টা করছেন।