মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০৩:২২ পিএম
শাহ আলী ও সাদিয়া আক্তার। ছবি: হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার পুরান পাথাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর শাহ আলী। প্রায় ৫ শতকের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘরে তার পরিবারের বাস। এ ঘরে দুই ছেলে ও চার মেয়েসহ ৮ জনের বসবাস। এর মধ্যে জন্মের ২ মাসের মাথায় টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টি শক্তি হারায় তার মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১১)।
টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি মেয়ের। নিজেরও বয়স বাড়ায় আগের মতো করতে পারেন না দিনমজুরের কাজ। থমকে যাওয়া সংসারের হাল ধরতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই মেয়েকে নিয়ে নেমে পড়েন রাস্তায়। লোকজন তাদের গজল ও গান শুনে যে অর্থ দেয়, তাই দিয়ে চলে ৮ জনের সংসার। তবে বাবা-মেয়ের গজল ও গানে মুগ্ধ লোকজন।
শাহ আলী আলী জানান, ৬ মাস ধরে অন্ধ মেয়েকে নিয়ে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এবং মাজারে গজল ও গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে লোকজন আর্থিকভাবে সহায়তা করছে। তার মেয়েকে সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। একইসাথে মেয়ের চিকিৎসার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
মোতাব্বার হোসেন কাজল ও মুহিন শিপন বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের প্লাটফর্মে বাবা ও মেয়ের কণ্ঠে গজল ও গান শুনেছি। অসাধারণ কণ্ঠ। তাদের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে লোকজন ৫ থেকে শুরু ২০ টাকা পর্যন্ত সহায়তা করেন। তারা এভাবে স্থানে স্থানে গিয়ে গজল ও গান পরিবেশন করে টাকা রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সুচিকিৎসা পেলে অন্ধ মেয়ের চোখ ভালো হবে মনে করছেন বাবা শাহ আলী।
বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ বলেন, শাহ আলীর ভিটেমাটি ছাড়া তেমন কোনো জমি-জমা নেই। তিনি অন্ধ মেয়েকে নিয়ে গজল ও গান গেয়ে বেড়ান নানা স্থানে। লোকজন তাদের সহযোগিতা করেন।