কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ০১:২৪ পিএম | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ০১:২৮ পিএম
ফাইল ছবি
সাম্প্রতিক সময়ে র্যাবের বিরুদ্ধে তোলা বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগগুলোর তদন্ত বাংলাদেশ সরকার কতটা স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র তা পর্যবেক্ষণ করবে। একই সাথে তদন্তের ফলাফলে কি বেরিয়ে আসে সেটিও দেশটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। পর্যবেক্ষণ শেষে বাংলাদেশের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাতে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এক মুখপাত্র এসব কথা জানিয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর প্রায় চার মাস পর কয়েকদিন আগে র্যাবের সাথে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহত হন।
গত ১৭ এপ্রিল কুমিল্লায় সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. রাজু এবং এর দুই দিন পর গত ২০ এপ্রিল মানিকগঞ্জে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য কাউসার র্যাবের সাথে গোলাগুলিতে নিহত হন বলে জানায়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওই মুখপাত্র জানান, ওই দুই যুবকের নিহতের ঘটনাসহ সাম্প্রতিক সময়ে র্যাবের বিরুদ্ধে তোলা সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ গুরুত্বের সাথে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি আরো জানান, বিচারবহির্ভূত সব হত্যার অভিযোগ তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। এ বিষয়ে তার দেশ অবগত রয়েছে। তবে তারা তদন্তের স্বচ্ছতার বিষয়টি ও এর ফলাফল অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
উল্লেখ্য, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দুই দেশের সম্পর্কে বেশ অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশ ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কথা শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে আসছে। পরে সম্পর্ক আগের মতো স্বাভাবিক করে তুলতে উভয় দেশের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক ও সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে নিষেধাজ্ঞার জেরে নাটকীয়ভাবে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে।
এদিকে, গত রবিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত এক সেমিনারে র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নিজ দেশের অবস্থান ফের তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ ছাড়া র্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সম্ভব নয়। র্যাবকে মৌলিক মানবাধিকার মেনে চলতে হবে। র্যাব যেভাবে সন্ত্রাস মোকাবিলা করছে সেভাবেই এই বাহিনীকে কার্যকর দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের উন্মুক্ত সেশনে অন্যদের মধ্যে র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি র্যাবের ইতিবাচক কার্যক্রম তুলে ধরে সংস্থাটির অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।